9 years of Narendra Modi Government

মোদী, এবং মোদী..., রাজ্যে ভোটের হাওয়া তৈরি করতে ন’বছর পূর্তি পরব পদ্মের, দায়িত্বে অনামীরা

মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি হতে চলেছে চলতি মাসে। গোটা দেশে এক মাসের কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গও বাড়তি গুরুত্ব পেতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ১৯:১০
Share:

চলতি মাসেই মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই একমাত্র মুখ। বিজেপির এই নীতি নতুন কিছু নয়। সদ্যই মোদীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের শততম পর্ব নিয়ে দেশ জুড়ে কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। সেপ্টেম্বরে মোদীর জন্মদিন উপলক্ষেও এক পক্ষ কাল ধরে নানা কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে। তারই মধ্যে মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি পালনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। যার লক্ষ্যই হবে মোদী সরকারের জয়গান করা। যে পাঁচ রাজ্যে সামনেই নির্বাচন, তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গও এই কর্মসূচিতে বাড়তি গুরুত্ব পেতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। তেমন নির্দেশও এসেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে রাজ্য বিজেপিতেই একাংশের প্রশ্ন, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এত রকমের ‘ইস্যু’ থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মোদীর জয়গান কি খুব কার্যকরী হবে? এ সব প্রশ্নের মধ্যেও এই রাজ্যে ওই কর্মসূচির জন্য একটি পরিচালন দল তৈরি করেছেন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

Advertisement

রাজ্য বিজেপির নেতারা জানেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আদৌ পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ভাবিত নন। তাঁদের লক্ষ্য, শুধুই লোকসভা। তাই বিনা বাক্যব্যয়ে পরিচালন দল গড়া হলেও তাতে যেন কিছুটা নিয়মরক্ষার ছাপ। সাত জনের ওই দলের শীর্ষে রয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এ ছাড়া রয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। এই দু’জন ছাড়া বাকি সকলেই তেমন গুরুত্বপূর্ণ নেতা নন। রয়েছেন রাজ্য কমিটির সদস্য সঞ্জয় সিংহ, অম্বিকা রায়, তুষারকান্তি ঘোষ, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র এবং কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার। সৌমিত্রকে ইদানীং তেমন কোনও বড় দায়িত্ব দেওয়া হয় না। যুব মোর্চার সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সুকান্ত জমানায় করা হয় দলের সহ-সভাপতি। তবে কি এই কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে না চেয়েই এমন দল গড়েছে রাজ্য বিজেপি? এই প্রসঙ্গে দলের এক নেতা বলেন, ‘‘বিজেপিতে ব্যক্তি কোনও বিষয় নয়, সকলকে মিলেই কাজ করতে হবে। ঘুরিয়েফিরিয়ে সকলকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়।’’

রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ মে থেকে রাজ্যে শুরু হবে ওই কর্মসূচি। শেষ হবে ৩০ জুন। এক মাসের এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দলের তরফে সভা, সমাবেশ করা হবে। সেখানে ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত মোদী সরকার কী কী সাফল্য পেয়েছে তার প্রচার হবে। কর্মসূচি শুরুর দিনে দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী কোনও ভাষণ দিতে পারেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে তা সম্প্রচারিত হবে গোটা রাজ্যে। এর পরে রাজ্য নেতারা তো বটেই, কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসবেন বাংলায়। দলের লক্ষ্য, এক মাস সময়ের মধ্যে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা এলাকায় কমপক্ষে একটি করে বড় সভা করা। তবে কী ধরনের কর্মসূচি হবে, তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মতো ঠিক করবে সৌমিত্রের নেতৃত্বাধীন দল। তারাই ঠিক করবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের কোন নেতা কবে, কোথায় যাবেন।

Advertisement

রাজ্যে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তবে এই কর্মসূচির লক্ষ্য আদৌ পঞ্চায়েত ভোট নয়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের যে প্রস্তুতি বিজেপি ইতিমধ্যেই শুরু করেছে তারই অঙ্গ হবে মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি কর্মসূচি। গোটা দেশেই এই সময়ে একই ধরনের সভা, সমাবেশ ও প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে বিশেষ গুরুত্ব পাবে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং মিজোরাম। কারণ, চলতি বছরেই এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। গুরুত্বের বিচারে বাংলাও যথেষ্ট প্রাধান্য পাবে। কারণ, লোকসভায় আসন বাড়ানোর লক্ষ্যে বিজেপির অন্যতম টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৫ আসনের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন। সদ্যই পর পর দু’বার রাজ্য সফর করে গিয়েছেন শাহ। চলতি বছরে এসেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও। এক মাস ধরে চলা মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তির মধ্যে শাহ, নড্ডাও আসতে পারেন। রাজ্য বিজেপি চাইছে, ওই সময়ে মোদীও একবার বাংলায় আসুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন