ঘুষের হুলে বিজেপি ফের নারদ-নারদ

বিধানসভা ভোটের আগে নারদ-হাতিয়ারে চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা শুরু করল ঝিমিয়ে পড়া বিজেপি। নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনে তৃণমূলের রথী-মহারথীদের ঘুষ নেওয়ার দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছে সোমবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৮
Share:

বিধানসভা ভোটের আগে নারদ-হাতিয়ারে চাঙ্গা হওয়ার চেষ্টা শুরু করল ঝিমিয়ে পড়া বিজেপি। নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনে তৃণমূলের রথী-মহারথীদের ঘুষ নেওয়ার দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছে সোমবার। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল, অবরোধ এবং রাজভবন অভিযান করে কলকাতায় হইচই ফেলে দিল বিজেপি। পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত হয়ে গ্রেফতার হলেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ-সহ বহু কর্মী। পরে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়। বিজেপি অবশ্য নারদ-হাতিয়ার ছাড়তে নারাজ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নির্দেশ— সব নেতা এবং কর্মীর মোবাইলে ঘুষ কাণ্ডের ভিডিওটি যেন অবশ্যই থাকে। ভোট না মেটা পর্যন্ত সুযোগ পেলেই তাঁরা যেন ওই ভিডিও আমজনতাকে দেখান।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের খবর, ভোট মরসুমে নারদ-কাণ্ড জিইয়ে রাখতে দল মূলত তিনটি কৌশল নিয়েছে। এক, ওই ভিডিও সব সময় মোবাইলে রাখা এবং সাধারণ মানুষকে দেখানো। দুই, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে ঘুষ কাণ্ড নিয়ে পথনাটিকা করা। তিন, কর্মীদের মোবাইলে ওই ভিডিও-র থিম মিউজিকটি কলার টিউন হিসাবে রাখা।

কৈলাস, রাহুলবাবু, দেবশ্রী চৌধুরী, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী প্রমুখের নেতৃত্বে এ দিন বিজেপি-র রাজ্য দফতর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল হয়। ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলের কাছে পুলিশ মিছিল আটকালে বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোন। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। এর পর রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে কর্ডন ভাঙলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিজেপি-র নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে। কৈলাস বলেন, ‘‘আমরা চাই, সিবিআই ভোটের আগেই ঘুষ-ভিডিও-র তদন্ত করুক।’’

Advertisement

এর পর কৈলাস, দেবশ্রী, শিশির বাজোরিয়া, জয়প্রকাশ মজুমদার প্রমুখ রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে লেখা দাবিপত্র জমা দেন। তার নির্যাস— ঘুষ-কাণ্ডের জেরে মানুষ রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা হারিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হয় মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করুন, নয়তো তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হোক।

বিজেপি নেতৃত্ব যখন রাজবভনে, তখন দলের বহু কর্মী বাইরে অবস্থান করছিলেন। পরে তাঁরা মহাত্মা গাঁধী রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে অবরোধ করেন ধৃতদের মুক্তির দাবিতে। কিছু ক্ষণ পরে অবরোধ উঠে যায়। তবে রাহুলবাবু ছাড়া দলের আর কোনও প্রথম সারির নেতা কিন্তু এ দিন গ্রেফতার হননি।

হাওড়াতেও এ দিন দুই জায়গায় অবরোধ করে বিজেপি। জিআর রোড এবং বঙ্কিম সেতুর সংযোগস্থলে অবরোধে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। মধ্য হাওড়ার বঙ্গবাসী সিনেমাহল মোড়ের অবরোধে ঘুষ-ভিডিওয় দৃশ্যমান নেতাদের ছবিতে আগুন লাগানো হয়। দুই জায়গাতেই পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন