Primary teachers recruitment case

‘আদালত তদন্তকারী সংস্থার মতো কাজ করছে, দুর্নীতি প্রমাণ হয়নি’! প্রাথমিক মামলায় সওয়াল পর্ষদের

মঙ্গলবার প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ১৯:১৯
Share:

৩২ হাজার চাকরি বাতিলের শুনানিতে ‘নতুন যুক্তি’ পর্ষদের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘দুর্নীতি হয়নি।’ প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় আদালতে সওয়াল করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাদের বক্তব্য, কয়েক জন আধিকারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। কিন্তু তাঁরা টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্ত আদালতে বলেন, কিছু পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তা বলে পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া কলুষিত হয়েছে, এটা বলা যায় না। দুর্নীতির নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ ছাড়াই ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে হাই কোর্টের তৎকালীন সিঙ্গল বেঞ্চ।

Advertisement

মঙ্গলবার প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলার। পর্ষদের প্রশ্ন, ‘‘ইন্টারভিউতে যাঁদের বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কি সকলে দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছেন? তাঁরা কাকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, এমন কোনও তথ্য আদালতের সামনে আসেনি।’’ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন, ‘‘তদন্তকারী সংস্থার মতো কাজ করেছে আদালত। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নিয়ে পরীক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বিচারপতি।’’

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করে। চাকরি পান ৪২ হাজার ৯৪৯ জন। কিন্তু ওই নিয়োগে একাধিক ত্রুটির অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০২৩ সালের ১৬ মে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। তাঁর রায় ছিল, চাকরি বাতিল হলেও ওই শিক্ষকেরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে ওই নির্দেশের তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে রাজ্যকে। ঘটনাক্রমে ওই মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। তার পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। যদিও শীর্ষ আদালত হাই কোর্টেই এই মামলা ফেরত পাঠায়।

Advertisement

গত ৭ এপ্রিল শুনানি স্থগিত হয়ে যায় বিচারপতি সৌমেন সেন এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোয়। মঙ্গলবার রাজ্য, পর্ষদ এবং চাকরিহারাদের একাংশের দায়ের করা মামলার শুনানিতে পর্ষদের উদ্দেশে বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘একটি নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে আপনারা কী কী বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ করেছেন? ’’ তার জবাবে পর্ষদ জানায়, নিয়ম মেনে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। টাকা দিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তারা এ-ও জানিয়েছে, চাকরি বাতিলের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। ইন্টারভিউতে বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। কয়েক জনের বক্তব্যের ভিত্তিতে আদালত ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সেখানেও নির্দিষ্ট করে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই।

সওয়াল শেষে আদালত জানায়, গরমের ছুটির পরে আবার এই মামলার শুনানি শুরু হবে। পর্ষদের তরফে আরও দু’দিন সওয়াল করার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। আগামী ১২ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement