West Bengal Budget 2023-24

স্বাস্থ্যসাথীতে বরাদ্দ ছিল ২৫০০ কোটি, এ বার মিলল ২৫১০ কোটি, ১০ কোটি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন

স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এখন ইনসিয়োরেন্স বা বিমা মোডে চলে না, চলে অ্যাসিয়োরেন্স মোডে। তাই গত বছর কতটা খরচ হয়েছে, সেই ধারণা থেকেই ওই খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৪
Share:

স্বাস্থ্যসাথীতে কমবেশি ৪৫.৪৮ লক্ষ মানুষকে সুবিধা দিতে খরচ হয়েছে ৬১৯৯.৯৪ কোটি টাকা। প্রতীকী ছবি।

আগ্রহে এবং অভিযোগে বাংলার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ বহুচর্চিত প্রকল্প। সেই কল্যাণ প্রকল্পে গত বছরের বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২৫০০ কোটি টাকা। এ বার স্বাস্থ্যসাথী খাতে বরাদ্দ ২৫১০ কোটি টাকা। সাকুল্যে এই ১০ কোটি টাকা বৃদ্ধি একই সঙ্গে নানা প্রশ্ন উস্কে দিচ্ছে, অভিযোগে জোগাচ্ছে ইন্ধন। স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যে-হারে পরিষেবা প্রদানের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে, তাতে এই বৃদ্ধি কতটুকু?’’ শহর থেকে জেলায় উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে কলকাতার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক পাঠিয়ে শিবির করা হচ্ছে। অথচ বুধবার ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেটে আগামী দিনে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে স্থায়ী পরিকাঠামোর বিষয়টি অবহেলিত রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যের নানা খাতে যে-বরাদ্দ জুটেছে, তা কম। এ দিন বিধানসভায় বাজেট পেশ করে অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, আগামী অর্থবর্ষে স্বাস্থ্যে প্রায় ৬৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হল। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১৭,৫৭৭ কোটি টাকা। এ বার সেটি হয়েছে ১৮,২৬৪.৬২ কোটি।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্যে স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কথা কিছুই বলা হয়নি বাজেটে। কিছু জানানো হয়নি আয়ুষ্মান ভারতের বিষয়েও। ভিন্‌ রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া হবে কি না, সেটাও স্পষ্ট করা হল না।’’

বাজেট জানাচ্ছে, স্বাস্থ্যসাথীতে কমবেশি ৪৫.৪৮ লক্ষ মানুষকে সুবিধা দিতে খরচ হয়েছে ৬১৯৯.৯৪ কোটি টাকা। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটার প্রশ্ন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীতে বহু সাধারণ অপারেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোটি কোটি টাকা বকেয়া থাকায় বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে। বাজেটে যা বরাদ্দ হয়েছে, তাতে সমস্যার সমাধান হবে তো?’’ স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এখন ইনসিয়োরেন্স বা বিমা মোডে চলে না, চলে অ্যাসিয়োরেন্স মোডে। তাই গত বছর কতটা খরচ হয়েছে, সেই ধারণা থেকেই ওই খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যে উন্নয়নের কথা বললেও যে-সব খামতি রয়েছে, সেগুলিকে পৃথক গুরুত্ব দেওয়ার মতো কিছুই বাজেটে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রায় ১৪ হাজার শয্যা তৈরি হলেও সেখানে সব রোগের বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসা পরিষেবা না-পাওয়ার মতো নানা ঘাটতি রয়েছে। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যে বরাদ্দ সামগ্রিক বাজেটের মাত্র ৬.৯%। স্বাস্থ্য বাজেট রাজ্য জিডিপি-র মাত্র ১.৩%। এই স্বাস্থ্য-বাজেট কোনও ভাবেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না।’’ বাজেট জানাচ্ছে, করোনা রোধ ব্যবস্থাপনায় ২৯৯২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চোখের আলো কর্মসূচিতে ৮৯.৯৪ লক্ষ মানুষ চক্ষু পরীক্ষা, স্বাস্থ্য ইঙ্গিত প্রকল্পে ৯৪.৪৮ লক্ষ মানুষ টেলিমেডিসিনের সুবিধা পেয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন