দিল্লির নৈকট্যে বিভ্রান্তি মুছতে চায় রাজ্য কংগ্রেস

দিল্লিতে রাহুল গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করার পর দিনই কলকাতায় কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য নির্বাচনে হাতে হাত মিলিয়ে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ওয়াকফ বোর্ডে এক জন করে সাংসদ ও বিধায়কের জন্য সদস্যপদ বিরোধীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে প্রার্থী দিয়েই লড়াইয়ে যাবে বাম-কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share:

দিল্লিতে রাহুল গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করার পর দিনই কলকাতায় কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য নির্বাচনে হাতে হাত মিলিয়ে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ওয়াকফ বোর্ডে এক জন করে সাংসদ ও বিধায়কের জন্য সদস্যপদ বিরোধীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে প্রার্থী দিয়েই লড়াইয়ে যাবে বাম-কংগ্রেস। জাতীয় স্তরে রাহুল-মমতার নৈকট্য যে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ উল্টে দেয়নি, তা বোঝাতেই এই নিয়ে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এগোতে চাইছে বিধান ভবন ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

Advertisement

বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়েছিল বামেরা। ভোটে বিপর্যয়ের পরেও বিধানসভার মধ্যে দু’পক্ষের বিধায়কদের সমন্বয় রেখেই চলছিলেন আব্দুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তী। কিন্তু নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় জাতীয় স্তরে মমতা কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছাকাছি চলে আসায় এ রাজ্যে দুই বিরোধী দলের নিচু তলায় বিভ্রান্তি স্বাভাবিক। কর্মী মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি কংগ্রেস-তৃণমূল আবার পুরনো বন্ধুত্ব ফিরে পাবে? প্রদেশ নেতৃত্বের রাশ কি টেনে ধরবে এআইসিসি? এই বিভ্রান্তি যাতে রাস্তায় নেমে দলের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত না ঘটায়, তার জন্যই সক্রিয় হয়েছেন মান্নান-সুজন। বিরোধী দলনেতা মান্নান বুধবার বলেছেন, ‘‘রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে, তা চলবে। সেই সঙ্গে নোট বাতিলের বিরুদ্ধে এআইসিসি-র নির্দেশে কংগ্রেস রাজ্যে পৃথক আন্দোলন করবে।’’

তবু মমতার কৌশলে বিরোধী শিবিরে সংশয় তৈরি হতে পারে বুঝেই রাজ্য কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব উদাহরণ দিচ্ছেন, কেন্দ্রে ইউপিএ-১ সরকার বামেদের সমর্থন নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই বলে কি রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস বাম-বিরোধিতা বন্ধ করে দিয়েছিল? মমতার প্রতি প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে নরম মনোভাব না দেখানোর বার্তা দিতেই ওয়াকফের সদস্য নিয়ে বামেদের সঙ্গে মান্নানেরা তাল মিলিয়ে চলতে চাইছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুও বলেছেন, ‘‘নোট বাতিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দল কখনও একসঙ্গে, কখনও আলাদা লড়াই করছে। তার মানে এই নয়, রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে আমি আর মান্নানদা যে ভাবে লড়াই করছি, তা বন্ধ হয়ে গেল।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘দিল্লিতে একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে দু’দলের নেতৃত্বের কথা হয়েছে। তার বেশি কিছু নয়।’’ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, অধীর রাহুলের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, এমন বার্তা যেন না যায় যে, তাঁরা তৃণমূলের আঁচল ধরে চলছেন! রাহুলও আশ্বাস দিয়েছেন, তা হবে না। রাজ্য কংগ্রেস বরং নিজেদের তৎপরতা বাড়াক। এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার দাবি, ‘‘নিজের প্রয়োজনে মমতাই তো রাহুলের দ্বারস্থ হয়েছেন। এতে আমাদের বিব্রত হওয়ার কি আছে? বিড়ম্বনা হলে তো তৃণমূলেরও হবে!’’

Advertisement

পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে মান্নান ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা সেরেছেন। ওয়াকফ বোর্ডে প্রতিনিধি হতে পারবেন দুই বিধায়ক ও দুই সাংসদ। মান্নান পার্থবাবুকে বলেন, এক বিধায়ক ও এক সাংসদের পদ যেন বিরোধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পার্থবাবু বলেন, বিষয়টি তিনি মমতাকে জানাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন