প্রতি দিনের জন্য দরকার ছিল ৭৫ লক্ষ টাকার নতুন নোট। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা সরবরাহ করতে পারবে না বলে টানা ২২ দিন টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। এর ধাক্কায় শুধু পশ্চিমবঙ্গেই ৬৬ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছেন জাতীয় সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গোটা দেশে ক্ষতির পরিমাণ ১২৫৪ কোটি।
বাইশ দিন পর শুক্রবার, রাত ১২টা থেকে ফের টোল নেওয়া শুরু হচ্ছে। টোলের টাকা ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে নিতে প্রস্তুত প্রতিটি প্লাজা। থাকছে প্রিপেড টোল ট্যাগ লাগানোর ব্যবস্থাও। সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আশা, রাজ্যের টোল প্লাজাগুলি থেকে এ বার মোটা টাকা আদায় হবে। ২২ দিন বন্ধ থাকায় যে লোকসান হয়েছে, সেই ধকলও কাটিয়ে ওঠা যাবে।
এ রাজ্যে যে ছ’টি জাতীয় সড়ক রয়েছে, তাতে আছে মোট ১৬টি টোল প্লাজা। এর মধ্যে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক (সাবেক দিল্লি রোড)-এর উপর পানাগড়, পালসিট, ডানকুনি এবং বিবেকানন্দ সেতুর উপর চারটি টোল প্লাজা রয়েছে। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বা বম্বে রোডের উপর ধূলাগড় ও ডেবরা, ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে সোনাপেতিয়া, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বহরমপুর, ফরাক্কা, ৩১ নম্বর এবং ৩১সি জাতীয় সড়কে ডালখোলা, সোনাপুর, সলসলাবাড়ি চেকপোস্ট উল্লেখযোগ্য।
আকালে নাকাল
• ধূলাগড়
• পালসিট
• ডানকুনি
• চাঁদের মোড়
• গুয়াবাড়ি
৫৬
৩৪
৩৪
১৬
৬
১৪
৮.৫
৮.৫
৪
১.৫
সব অঙ্ক লক্ষ টাকায়
এ রাজ্যের যে কয়েকটি টোল প্লাজা দিয়ে গাড়ি চলাচল সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের পালসিট। এই প্লাজাটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজে দেওয়া রয়েছে। সেখানকার ম্যানেজার প্রীতম চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মাসে সরকারকে আমরা প্রায় ১২৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে থাকি। রোজ অন্তত ৩৪ লক্ষ টাকা সরকারের ঘরে জমা পড়ে। এ জন্য প্রতি দিন নতুন নোটে সাড়ে আট লক্ষ নগদ টাকার প্রয়োজন ছিল।’’ একই অবস্থা অন্য প্লাজাগুলিতেও। পশ্চিমবঙ্গের ধূলাগড় টোল প্লাজার রোজগার সবচেয়ে বেশি। দিনে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা সরকার ওই প্লাজা থেকে পেয়ে থাকে। প্লাজাটি চালু রাখার জন্য নতুন নোটে দিনে ১৪ লক্ষ টাকা খুচরো দরকার।
বাজারে ৫০০ টাকার নোট পর্যাপ্ত নয়। ১০০ টাকার নোট খরচ করতে চাইছেন না কেউ। তা হলে কি টোল প্লাজাগুলি ঠিক ভাবে চলতে পারবে? সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, সে কারণেই কার্ডের মাধ্যমে টোল নেওয়া চালু হচ্ছে। প্রিপেড কার্ডেও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় টোল নেওয়া হবে। ফলে নগদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।