যুক্তরাষ্ট্রীয় আর্থিক কাঠামোকে লঘু করে দিচ্ছে কেন্দ্র: অমিত

বিরোধীরা বার বার রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০৩:২০
Share:

—ফাইল চিত্র।

ছিল রাজ্যের বছরভর আয়-ব্যয়ের হিসাব বিধানসভায় পাশ করিয়ে নেওয়ার পালা। বুধবার সেই অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিলের জবাবি ভাষণে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে এক হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।

Advertisement

বিরোধীরা অবশ্য বার বার রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অমিতবাবু পাল্টা জানান, বাম জমানার চেয়ে গত আট বছরে ঢের উন্নতি করেছে রাজ্য। কেন্দ্রের সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় বলেন, ‘‘ওরা মেক ইন ইন্ডিয়া’র কথা বলছে, আসলে ব্রেক ইন ইন্ডিয়া হচ্ছে। দেশে নতুন শিল্পে লগ্নি ১৯% কমে গিয়েছে। পর পর চার বছর ধরে শিল্পে লগ্নি কমছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কোনও সরকার বাজেটে ৫০টি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করার কথা ভাবতে পারে! সরকারি সংস্থা পর পর বিক্রি করে দিচ্ছে দিল্লির সরকার।’’

একইসঙ্গে সোনার দাম বাড়িয়ে কেন্দ্র সোনার চোরাচালানে উৎসাহ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অমিতবাবু। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেস বা লেভি বসিয়ে কেন্দ্র আয় বাড়াচ্ছে। অথচ সেই আয়ের কোনও অংশ রাজ্য পাচ্ছে না। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আর্থিক ক্ষেত্রের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরম্পরাকে লঘু করে দিচ্ছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার।’’

Advertisement

যদিও কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মা, সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যদের বক্তব্য, রাজ্যের নিজস্ব আয় তেমন বাড়েনি। কেন্দ্রের থেকে পাওয়া করের টাকা, আর অনুদান এসেছে বলেই সরকার খরচের বহর বাড়াতে পেরেছে। সুখবিলাসবাবু বিধানসভায় বলেন, ‘‘বাম জমানার ঋণ শোধ করতে সব টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে বলে সরকার যা বলে, তা পুরো সত্য নয়। কারণ, বর্তমান সরকার বাজার থেকে বেশি ঋণ নেয়। সেই ঋণের সুদ ছ’মাসের মধ্যে শুধতে হয়। ফলে গত আট বছরে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তার সুদ বাবদও মোটা টাকা শোধ করতে হচ্ছে।’’

অর্থমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, গত আট বছরে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন আড়াই গুণ বেড়েছে। রাজ্য পরিকল্পনা খাতে ব্যয় বেড়েছে ৬ গুণ। সেই সঙ্গে স্থায়ী নতুন সম্পদ তৈরির জন্য মূলধনী ব্যয় বেড়েছে ১১ গুণ। রাজ্যের নিজস্ব আয় বাম জমানায় ২১ হাজার কোটি থেকে বেড়ে সাড়ে ৬৫ হাজার কোটিতে পৌঁছেছে। একই ভাবে ২০১০-১১’তে ঋণ-জিএসডিপি’র অনুপাত ছিল ৪০.৬৫%। ২০১৮-১৯ এ তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩.৯০%।

বিরোধীরা অবশ্য সভার বাইরে জানান, এ রাজ্যেও গত আট বছরে শিল্পে উল্লেখযোগ্য লগ্নি আসেনি। পাশাপাশি এ রাজ্যেও সমস্ত সরকারি যৌথ উদ্যোগের সংস্থার শেয়ার সরকার বিক্রি করতে উদ্যত হয়েছে। এ ভাবেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে মেট্রো ডেয়ারি। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিলগ্নিকরণের সমালোচনা রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর মুখে মানায় না।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন