রাজ্যে চতুর্থ মুক্ত জেল মেদিনীপুরে

কারা দফতর সূত্রের খবর, নতুন মুক্ত সংশোধনাগারে প্রথম দিকে ৫০ জন বন্দি থাকবেন। বাড়িটি হবে দোতলা। এক-একটি ঘরে দু’তিন জন থাকবেন।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

তিনটি আছে। আরও একটি ‘মুক্ত জেল’ বা মুক্ত সংশোধনাগার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের কারা দফতর। সেটি তৈরি হচ্ছে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলের পাশেই। রাজ্য মন্ত্রিসভার ৮ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে তিনটি মুক্ত সংশোধনাগার খোলা হয়েছে লালগোলা, রায়গঞ্জ ও দুর্গাপুরে।

Advertisement

কারা দফতর সূত্রের খবর, নতুন মুক্ত সংশোধনাগারে প্রথম দিকে ৫০ জন বন্দি থাকবেন। বাড়িটি হবে দোতলা। এক-একটি ঘরে দু’তিন জন থাকবেন। মুক্ত সংশোধনাগার দেখভালের জন্য ১১ জন কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘মুক্ত জেল সংশোধন প্রক্রিয়ারই একটি অঙ্গ। যত বেশি মুক্ত জেল তৈরি হবে, বন্দিদের সংশোধিত হয়ে ওঠার সুযোগ তত বাড়বে।’’

কাকে বলে মুক্ত সংশোধনাগার?

Advertisement

‘‘মুক্ত জেলে বন্দিদের বন্দিদশা অনেকটাই চলে যায়,’’ বলছেন এক কারাকর্তা। কতটা বন্দিত্ব চলে যায়? জেল সূত্রের খবর, সাধারণ জেলের বন্দিরা বাইরে যাওয়ার সুযোগ পান না। মুক্ত জেলের আবাসিকেরা চাইলে জেলের বাইরে কাজে যেতে পারেন। তবে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তাঁদের জেলে ফিরে আসতে হয়। সাধারণ জেলে নতুন ও পুরনো সব বন্দিই থাকেন। কিন্তু ১৫ বছর ধরে নাগাড়ে জেলে থাকলে তবেই মুক্ত সংশোধনাগারে থাকার অনুমতি পাওয়া যায়। সাধারণ জেলে বন্দিরা কোনও নিকটজনকে সঙ্গে নিতে পারেন না। অনেক মুক্ত জেলেই পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ দেওয়া হয় আবাসিকদের।

এক জেলকর্তা জানান, জেলে বন্দিদের আচরণ ও মানসিক প্রবণতা লক্ষ করা হয়। কে কেমন কাজ করছেন, কার ব্যবহার কেমন ইত্যাদি। বন্দি যে-এলাকায় অপরাধ করে ধরা পড়েছেন, সেখানকার পুলিশের কাছ থেকেও রিপোর্ট নেওয়া হয়। কাদের মুক্ত জেলে পাঠানো হবে, বিভিন্ন রিপোর্টের ভিত্তিতে কারা দফতরের ডিজি-র নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।

লালগোলার মুক্ত জেলে ছোট ছোট বাড়ি আছে। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন বন্দিরা। অন্য দু’টি মুক্ত জেলে এই ব্যবস্থা নেই। মেদিনীপুরের মুক্ত জেলে বন্দিরা আপাতত পরিবার নিয়ে থাকতে পারবেন না। এক কারাকর্তা জানান, নীতিগত ভাবে মুক্ত জেলে পরিবার নিয়ে থাকার সুযোগ দিতে পারলে সেটাই ভাল। ধীরে ধীরে সেই বন্দোবস্ত হবে। রাজ্যের তিনটি মুক্ত জেল এখন অন্তত ২০০ বন্দি আছেন। নতুন মুক্ত জেল চালু হয়ে গেলে সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ২৫০-এর কাছাকাছি। তবে কবে ওই জেল চালু হবে, সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান কারামন্ত্রী।

কারামন্ত্রী জানান, অনেক বন্দি হাতের কাজ শিখছেন। গান, ছবি আঁকা, নাটকে যোগ দিয়ে নিজেদের বদলানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে হাতের কাজের সূত্রে উপার্জনও করেন। কিন্তু মুক্ত সংশোধনাগারে থাকার সুযোগ পেলে তবেই হাতের কাজ করে উপার্জন করা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন