নয়া বছরে রাজ্যে ডিএ ১৮%, ঘোষণা মমতার

মঙ্গলবার নবান্নে এ কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

জামাইষষ্ঠীর দিনে সুখবর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আরও ১৮ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পাবেন তাঁরা। মঙ্গলবার নবান্নে এ কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের পাশাপাশি সরকার-পোষিত বিভিন্ন পুরসভা, পঞ্চায়েত, নিগম ইত্যাদির কর্মচারীরা, ডিএ-প্রাপক স্কুল ও কলেজ শিক্ষকরা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরাও এই বাড়তি মহার্ঘ ভাতা পাবেন। পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিএ বৃদ্ধির কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে আট লাখ কর্মচারী বাড়তি ডিএ পাবেন বলে কর্মচারী সংগঠনগুলির হিসেব।

গত তিন বছর ধরে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হচ্ছিল দুর্গাপুজোর আগে বা পরে। এবং তা দেওয়া হচ্ছিল নতুন বছরের শুরুতে। এ বার ছ’মাস আগেই ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। মহার্ঘ ভাতার দাবিতে মামলা করেছে একাধিক কর্মচারী সংগঠন। তাদের অন্যতম আইএনটিইউসি প্রভাবিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘৩ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি। সেখানে নিজেদের বাঁচাতে এত দিন আগে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করল সরকার! ’

Advertisement

আরও পড়ুন: ক্লাস বন্ধ, স্কুল খোলা রাখায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কঠিন আর্থিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি। ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করেছি। এ বছর থেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হবে। উন্নয়নমূলক একাধিক প্রকল্প চলছে। সব কিছু করে আমরা ৯০% করলাম। সিপিএম সরকার ৩৫% মহার্ঘ ভাতা দিতে পেরেছিল।’’

সরকারের দাবি, কর্মচারীরা এখন ১০০% ডিএ পান। নতুন করে ১৮% ডিএ ঘোষণা করা হল। পাশাপাশি, মূল বেতনের ১০% ‘ইন্টেরিম রিলিফ’ (অন্তর্বর্তিকালীন ভাতা) দেওয়া হচ্ছে, যা ৭ শতাংশ ডিএ-র সমতুল। ফলে আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে ডিএ-র পরিমাণ হবে ১২৫%। এ জন্য রাজ্য সরকারকে প্রতি বছর অতিরিক্ত ৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক দায়িত্ব নিতে হবে। অর্থ দফতরের হিসাবে তৃণমূল সরকারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা দিতে গিয়ে বছরে ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

বিরোধী কর্মচারী সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, বেতন কমিশন দিতে না পারায় এককালীন ১০% ‘ইন্টেরিম রিলিফ’ দেওয়া হয়। তাকে মহার্ঘ ভাতার সমতুল বলা হচ্ছে কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সংগঠনের নেতারা।

২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি ১২৫% মহার্ঘ ভাতা দিয়ে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করেছিল কেন্দ্র। তখন রাজ্যে ডিএ ছিল ৭৫%। ২০১৭ সালে ১০ এবং ২০১৮ সালে ১৫% মহার্ঘ ভাতা দেওয়ায় এখন তা ১০০% হয়েছে। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, জানুয়ারিতেও কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা ৪৯% কম ডিএ পাবেন। এ দিন বেতন কমিশন নিয়ে কিছু বলেনি সরকার। এ পর্যন্ত তিন দফায় কমিশনের সময়সীমা প্রায় তিন বছর বাড়ানো হয়েছে। ২৬ নভেম্বর তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। মলয়বাবুর দাবি, ‘‘২০১৬ সাল থেকে এরিয়ার দিয়ে নয়া বেতন কাঠামো তৈরি করা হোক।’’

তৃণমূল প্রভাবিত কর্মীসংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘২০১৯ সালের মধ্যে মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত দাবিদাওয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতিতে অবিচল থাকায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ ডিএ ১২৫%-এ পৌঁছে যাওয়ায় বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, ধারণা সংগঠনের নেতাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement