Jal Jeevan Mission

জলজীবন মিশনে ৯৫১ কোটি, লক্ষ্য গতি বৃদ্ধিও

২০১৯ সালে কেন্দ্রের চালু করা জলজীবন মিশনের লক্ষ্য ছিল, ২০২৪ সালের মধ্যে সব গ্রামীণ পরিবারে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। গোড়া থেকেই এই প্রকল্পে বাড়তি জোর দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:২১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

চলতি আর্থিক বছরে (২০২৩-২৪) পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেয়েছে রাজ্য। সেই সূত্রে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে প্রায় ১৭০০ কোটি টাকা। তার পরে এ বার এই অর্থবর্ষের জন্য জলজীবন মিশনের প্রথম কিস্তির প্রথম ভাগের (প্রতি কিস্তির টাকা দেওয়া হয় দু’ভাগে) বরাদ্দও সম্প্রতি এসে পৌঁছছে বঙ্গে। এই প্রকল্প খাতে রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে পেয়েছে প্রায় ৯৫১ কোটি টাকা। তার পরে জোর দেওয়া হয়েছে প্রকল্পের গতি আরও বাড়ানোর উপরেও।

Advertisement

এ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে আজ বহু দিন। কেন্দ্রের দাবি, তার কারণ হিসাবে গরমিল। আর রাজ্যের অভিযোগ, এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। যে কারণে অক্টোবরের গোড়াতেই দিল্লিতে গিয়ে এর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। এই আবহে পঞ্চদশ কমিশনের বরাদ্দের পরে জলজীবন মিশনের টাকা পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও সকলেই মানছেন, বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যে টাকা আসাটাই বরং স্বাভাবিক ঘটনা।

২০১৯ সালে কেন্দ্রের চালু করা জলজীবন মিশনের লক্ষ্য ছিল, ২০২৪ সালের মধ্যে সব গ্রামীণ পরিবারে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া। গোড়া থেকেই এই প্রকল্পে বাড়তি জোর দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু গোড়ায় এ রাজ্যে এই প্রকল্পে গতি তেমন ছিল না। বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি জল সংযোগের কাজ। এর তীব্র সমালোচনা করে কেন্দ্র একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছিল এই প্রকল্পে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে। এমনকি মাঝে এক বার প্রকল্পের টাকা আটকে যাওয়ার পরিস্থিতি পর্যন্ত তৈরি হয়। শেষমেশ কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামাল দেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তার পর থেকে রাজ্যে এই প্রকল্পে খানিকটা গতি এসেছে। কাটছাঁট হয়নি কেন্দ্রীয় বরাদ্দও।

Advertisement

২০২০-২১ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে রাজ্যে খরচ হয়েছিল প্রায় ১৪৯৮ কোটি টাকা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, তার পরেই প্রকল্পের গতি এবং খরচের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্র। ২০২১-২২ সালে সেই খরচ পৌঁছয় প্রায় ২৮৪১ কোটি টাকায়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে খরচ আরও বেড়ে হয় প্রায় ৫৩৪৭ কোটি টাকা। আর এই আর্থিক বছরের শুধু প্রথম ছ’মাসেই খরচ হয়েছে প্রায় ৩৬৫১ কোটি টাকা। আরও ছ’মাস পরে আর্থিক বছরের শেষে তা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এক কর্তার কথায়, “এই প্রকল্পে কেন্দ্র-রাজ্যের অংশীদারি ৫০% করে। ফলে কেন্দ্র যে বরাদ্দ দিচ্ছে, তার সঙ্গে রাজ্যের বরাদ্দ মিলিয়ে (স্টেট ম্যাচিং গ্রান্ট) মোট বরাদ্দের ৮০% খরচ করলে, তবে পরের কিস্তি পাওয়া যায়। তা হয়েছে বলেই বরাদ্দ এসেছে।”

কেন্দ্রের তথ্য বলছে, রাজ্যকে প্রায় ১.৭৩ কোটি পরিবারে জল-সংযোগ করতে হবে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৬৬.৩৩ লক্ষ (৩৮.১৯%) পরিবার জলের সংযোগ পেয়েছে। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, আগামী মার্চের মধ্যে এক কোটি পরিবারে জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিকে। তাতে মাথায় রাখা হয়েছে প্রতি জেলার প্রতি ডিভিশনে অগ্রগতি, সম্ভাব্য জট ইত্যাদিও। সেই গতি ধরে রাখতে পারলে বাকি থাকা পরিবারগুলিতেও জল পৌঁছে দিতে সমস্যা হবে না, মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন