জমি নীতি বদলের ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। —ফাইল চিত্র।
এত দিন ধরে রাজ্য যে শিল্পনীতি অনুসরণ করে আসছে, তাতে শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত লগ্নির ১৫ শতাংশ টাকা খরচ বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ বারে সেই নীতি বদলের ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে।
এ দিন আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে বণিকসভা সিআইআই-এর প্রতিনিধি মোহন দেবনাথ বলেন, ‘‘শিল্প বিকাশ কেন্দ্রে জমি লিজ দেওয়ার নথি হাতে পেতে দেরি হচ্ছে বলে দ্রুত শিল্প বাড়ছে না।’’ মুখ্যমন্ত্রী শিল্প দফতরের সচিবদের কাছ থেকে জানতে চান, কেন নথি দিতে দেরি হচ্ছে? সচিবরা এর উত্তরে জানান, উন্নয়ন নিগমের নিয়ম অনুসারে, জমি পাওয়ার পরে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত লগ্নির ১৫ শতাংশ টাকা যন্ত্র, শ্রমিক নিয়োগের মতো কাজে খরচ করতে হবে। সেই নথি দেখালে তবে লিজ চুক্তির নথি হাতে মেলে।
মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেন, ‘‘না না। এই নীতিতে ভুল রয়েছে। এটা বদলাতে হবে। না হলে ছোট ব্যবসায়ীরা কী ভাবে কাজ করবে?’’ এর পরেই উন্নয়ন নিগম এবং শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রকে অবিলম্বে এই নীতি বদলানোর কথা বলেন তিনি।
তা হলে কত টাকা লগ্নির বিনিময়ে জমি চুক্তি হাতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা? এ ক্ষেত্রে দু’টি বণিক সংগঠনের বক্তব্য, লিজ চুক্তির পরেই তাঁরা জমি হাতে চাইছেন। অর্থাৎ, এক টাকাও লগ্নি না করে জমি পেতে চাইছেন তাঁরা। যুক্তি, লিজ নিতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ঋণ না নিয়ে কাজ শুরু করা খুবই কঠিন। পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, লগ্নি না দেখিয়ে জমি পেয়ে গেলে কেউ যদি তা সাব লিজে অন্যকে দেন বা আবাসন গড়েন, তখন কী হবে? এর আগে সরকার বারবার বলেছে, জমি নিয়ে ফেলে রাখা যাবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে। প্রশাসনিক মহলের একাংশের দাবি, সেই চাপ সামলাতে এটা ব্যবসায়ীদের পাল্টা চালও হতে পারে।