নোট বাতিলকে ঘিরে মোদী-মমতা সংঘাতের আবহে নতুন মাত্রা যোগ করল জুট কমিশনার সুব্রত গুপ্তের বদলি। পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের এই আইএএস অফিসারকে বস্ত্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পদে নিয়োগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই অফিসারকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে চিঠি দিল ক্ষুব্ধ নবান্ন।
রাজ্য প্রশাসন জানাচ্ছে, ১৯৯০ ব্যাচের আইএএস অফিসার সুব্রত গুপ্তকে ২০১২-এর নভেম্বরে পাঁচ বছরের ডেপুটেশনে কেন্দ্রে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তখন তিনি রাজ্য শিল্প পুনর্গঠন দফতরের সচিব ছিলেন। পরে কলকাতায় কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের অধীনে জুট কমিশনার পদে যোগ দেন। সম্প্রতি তাঁকে সেখান থেকে বদলি করে দিল্লিতে বস্ত্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পদে নিযুক্ত করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। নবান্নের খবর, শুনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের এক শীর্ষ কর্তা বুধবার বলেন, ‘‘সুব্রত গুপ্ত জুট কমিশনার হবেন, কার্যত এই শর্তেই তাঁকে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যখন কমিশনারই থাকছেন না, তখন তাঁকে রাজ্যেই ফিরিয়ে দেওয়া যুক্তিযুক্ত। কারণ, এখানে অফিসারের অভাব রয়েছে।’’
নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সুব্রতবাবুকে ফেরত পাঠানোর আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক দফতরের সচিব মনোজ অগ্রবাল। রাজ্যের এমন অবস্থানে কিছুটা হলেও হতবাক কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কর্তারা। তাঁদেরই এক জন জানান, সাধারণত কেন্দ্রে পাঁচ বছরের জন্য ডেপুটেশনে এলে পুরো মেয়াদ শেষ হলেই সেই অফিসারকে রাজ্যে ফেরত পাঠানো হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ফেরত পাঠানোর তেমন নজির নেই। আর মেয়াদকালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে কোন দায়িত্বে রাখা হবে, তা কেন্দ্রই ঠিক করে। এ নিয়ে রাজ্যের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না।
বস্ত্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘জুট কমিশনার পদে তিন বছর হয়ে যাওয়ার পরে সুব্রতবাবু কলকাতা পোর্টের চেয়ারম্যান পদের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি জাহাজ মন্ত্রক। তাই জুট কমিশনার পদে টানা চার বছর থাকার কারণে তাঁকে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ ওই কর্তার আরও যুক্তি, ‘‘যে পদে সুব্রতবাবু যোগ দিয়েছেন, সেখান থেকে নিজের রাজ্যকে সাহায্য করা যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তাঁকে ফেরত নিলে আখেরে রাজ্যেরই ক্ষতি হবে।’’ নবান্নের এক কর্তার অবশ্য সাফ কথা, তাঁরা ওই যুক্তি মানেন না। রাজ্য না চাইলে এখানকার কোনও অফিসারকে দিল্লিতে নেওয়া যাবে না।