করে বাড়ন্ত কাজ, বিকল্প স্বাস্থ্য-খাদ্য

এই প্রথম অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার (এসিটিও)-দের ডেপুটেশনে অন্য কাজে লাগানোর কথা ভাবছে রাজ্য। প্রশাসনের তরফে তার উদ্যোগও শুরু হয়েছে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

একে এসেছে ই-গভর্নেন্স। তায় গত জুলাই থেকে জিএসটি তার দোসর। দুইয়ে মিলে কাজ কেড়ে নিয়েছে বাণিজ্য কর বিভাগের প্রায় অর্ধেক অফিসারের। ব্যবসায়ীদের হিসেব-নিকেশে নজরদারির বদলে এই ডব্লিউবিসিএস-দের তাই এ বার নজর দিতে হতে পারে স্বাস্থ্য-খাদ্যের মতো বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে। এই প্রথম অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার (এসিটিও)-দের ডেপুটেশনে অন্য কাজে লাগানোর কথা ভাবছে রাজ্য। প্রশাসনের তরফে তার উদ্যোগও শুরু হয়েছে।

Advertisement

রাজ্যের অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী রাজ্যের বাণিজ্য কর বিভাগের কমিশনার স্মারকি মহাপাত্রকে চিঠি দিয়ে সেখানকার অফিসারদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন। গত ৭ নভেম্বর লেখা সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য ও খাদ্য দফতরের কাজে অগ্রাধিকার দিতে চাইছে। কিন্তু সেখানে কর্মীর অভাব রয়েছে। বাণিজ্য কর বিভাগের অফিসারেরা অর্থ বিষয়ক এবং ই-গভর্নেন্স-এর কাজে অভিজ্ঞ। সরকার তাই সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে তাঁদের অভিজ্ঞতাকে লাগাতে চাইছে।

ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় পাশ করা এই অফিসারেরা নির্দিষ্ট ভাবে বাণিজ্য কর নিয়েই কাজ করে এসেছেন। এ ভাবে তাঁদের অন্য দফতরে ডেকে নেওয়ার পিছনে জিএসটিকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন আধিকারিকেরা। কারণ ক্রয়-বিক্রয়ের যাবতীয় হিসেব জিএসটি রিটার্ন ফাইলে দেওয়া এখন বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, এ বছরের জুলাই মাস থেকে জিএসটি চালু হওয়ার পরে রাজ্যের ১,২০০ এসিটিও-র মধ্যে প্রায় ৬০০ জনেরই হাতে কাজ নেই। এক অফিসারের কথায়, ‘‘এত দিন এই অফিসারেরা সরেজমিনে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর বাণিজ্যিক লেনদেনের হিসেবে নজর রাখতেন। দেখতেন বাণিজ্যিক কর সংক্রান্ত বেনিয়মের মতো বিষয়। জিএসটি চালু হওয়ার পরে এখন অফিসে বসেই কম্পিউটারে সেই লেনদেন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। জিএসটি চালু হওয়ার পরে অনেকটাই কমে গিয়েছে আমাদের নিজস্ব তদন্ত ও অভিযান চালানোর কাজও।’’

Advertisement

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে রাজ্যের ই-গভর্নেন্স। সব দফতরেই অনলাইনে কাজের পরিকাঠামো রয়েছে। যদিও ই-গভর্নেন্সে প্রশিক্ষিত আধিকারিকের অভাব রয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। আর এখানেই বাণিজ্য কর বিভাগের অফিসারেরা এক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই সফল ভাবে ই-গভর্নেন্স-এর কাজ করে যাচ্ছেন। ফলে তাঁরা অন্য বিভাগে গিয়েও ই-গভর্নেন্সের সফল প্রয়োগ করতে পারবেন বলে মনে করছে সরকার।

অর্থ সচিবের চিঠি অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে ৩ বছরের জন্য এই অফিসারদের অন্য দফতরে নিয়ে আসা হবে। বাণিজ্য কর বিভাগের এই সব অফিসারদের নাম-ঠিকানা, বেতন-কাঠামো, জন্মতারিখ, চাকরিতে যোগদানের দিনক্ষণ-সহ সব তথ্য অবিলম্বে অর্থ দফতরকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে কোন অফিসারকে কোন বিভাগে পাঠানো হবে তা ঠিক করবে অর্থ দফতরই। ডেপুটেশনে যাওয়া এই অফিসারদের বেতন হবে বাণিজ্য কর বিভাগ থেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন