অতি অ্যাপে গাজন নষ্ট হওয়ার জোগাড়। এ বার তাই রাস্তাঘাট সংক্রান্ত যাবতীয় অ্যাপ এক ছাতার তলায় আনার কাজ শুরু করল নবান্ন।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, পথ নিরাপত্তায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এক গুচ্ছ অ্যাপ তৈরি হয়েছে। পরিবহণ দফতর একটি অ্যাপ তৈরি করেছে। কলকাতা পুলিশের নিজস্ব আর একটি অ্যাপ রয়েছে। কলকাতা পুলিশের ‘বন্ধু’ অ্যাপে ট্র্যাফিক সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। আবার একই ভাবে বাসের যাওয়া-আসা নিয়ে বিভিন্ন বিষয় রয়েছে পরিবহণ দফতরের ‘পথদিশা’ অ্যাপটিতে। এ ছা়ড়াও, পর্যটন দফতর এবং স্বাস্থ্য দফতরও পথ নিরাপত্তায় নিজস্ব অ্যাপ তৈরি করছে।
সম্প্রতি নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত রাজ্য রোড সেফটি কাউন্সিলের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (ট্র্যাফিক) বিবেক সহায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। ওই কমিটিতে আছেন পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নারায়ণস্বরূপ নিগম, কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) বিনীত গোয়েল এবং অতিরিক্ত ডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) এস কে সিংহ। ঠিক হয়েছে, ওই কমিটিই পথ নিরাপত্তা এবং ট্র্যাফিক সংক্রান্ত সমস্ত অ্যাপকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কাজ করবে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন দফতরের একই বিষয়ে পৃথক অ্যাপ থাকলে যাত্রীরা বিভ্রান্ত হবেন। তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
অ্যাপ ছাড়াও রাজ্য সড়কে গতি বেঁধে দেওয়া, রাস্তার সাইনেজ, লেন ড্রাইভিংয়ের প্রয়োগ কোথায়, কী ভাবে হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি পৃথক কমিটি তৈরি হয়েছে। ওই কমিটিতে পরিবহণ-সহ পূর্ত, কেএমডিএ-র মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারদের নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি ট্র্যাফিকও। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধুমাত্র গতি বেঁধে দিলেই হবে না। এ ব্যাপারে নজরদারি প্রয়োজন। পাশাপাশি, কোথায়, কোন গাড়ি, কী গতিতে চলবে, তা নির্দিষ্ট করতে লেন বিভাজনও প্রয়োজন। তারও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার। সে জন্যই এই কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’’
সম্প্রতি পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার বেশ কিছু যন্ত্রপাতি কেনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতার রাস্তায় সিসি ক্যামেরা, স্পিড গান, লেজার গানের মতো কিছু যন্ত্রের ব্যবহারও শুরু হয়েছে। এ বার ওই ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার রাজ্য সড়কগুলিতেও শুরু করবে রাজ্য সরকার। কোথায়, কত সংখ্যায় ওই সব যন্ত্র কেনা হবে, তা নিয়েও ওই কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।