টেন্ডার বা দরপত্র ডেকেই মাঝেরহাটে নতুন সেতু নির্মাণের দায়িত্ব দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা টেন্ডার প্রক্রিয়ার সঙ্গে এ বারের পদ্ধতির বিস্তর ফারাক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, নতুন প্রক্রিয়ায় সরকার কোনও দর বেঁধে দেবে না। সরকার নির্ধারিত ‘শর্ত’ মানার সঙ্গে সঙ্গে এক বছরের মধ্যে কী ভাবে উচ্চ মানের সেতু তৈরি করা হবে, সরকারি বিশেষজ্ঞ কমিটির সামনে সেই বিষয়ে ‘প্রেজেন্টেশন’ বা উপস্থাপনা দিতে হবে দরপত্র প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে ইচ্ছুক সব সংস্থাকে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে কিছু দিনের মধ্যেই ওই কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে রাজ্য।
নতুন সেতুর জন্য ‘কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেসড সিস্টেম’ বা কিউসিবিএস পদ্ধতিতে দরপত্র প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে এই পদ্ধতিতে দরপত্র ডাকা হয় না। মাঝেরহাটে নতুন সেতু তৈরির ক্ষেত্রে যে-হেতু বিশেষ কিছু শর্ত থাকছে, তাই এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে চাইছে রাজ্য। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই পদ্ধতিতে প্রথমেই দেখা হয় নির্মাণের গুণমান। সেতু কতটা উচ্চ মানের হবে, কারিগরি দিক থেকে তার একটা উপস্থাপনা দেখে নেওয়া হবে। রাজ্য সরকার চাইছে, অন্তত ১০০ বছর স্থায়িত্বের লক্ষ্যে সেতু তৈরি হোক। অন্যান্য শর্তের মধ্যে আছে, চার লেনের ওই আধুনিক সেতু তৈরি করতে হবে এক বছরের মধ্যে। সেই সময়সীমা মাথায় রেখে সেতুর গুণমান সম্পর্কে নিশ্চয়তা দিতে হবে দরপত্রে যুক্ত হতে আগ্রহী সব সংস্থাকে। যে-সব সংস্থার উপস্থাপনা সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে সন্তুষ্ট করতে পারবে, তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্প-ব্যয় খতিয়ে দেখা হবে।
এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, কোন কোন শর্তে দরপত্র ডাকা হবে, তার প্রস্তুতি চলছে। দরপত্রের খুঁটিনাটি টেকনিক্যাল বিষয়গুলি নির্বাচন করা হচ্ছে। তবে এই দরপত্র প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হবে না। অতি দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বা কাজের বরাত দেওয়া হবে নির্বাচিত সংস্থাকে। ‘‘সময়ের গুরুত্বের বিষয়টি বিশেষ ভাবে মাথায় রাখতে হচ্ছে বলেই কিউসিবিএস পদ্ধতিতে টেন্ডার ডাকার কথা ভাবা হচ্ছে,’’ বলেন ওই প্রশাসনিক কর্তা।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, পূর্ত দফতরের কর্তারা গত দু’সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আলাপ-আলোচনার পরে তিনটি নামী সংস্থা মাঝেরহাটে নতুন সেতু তৈরির কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। পূর্তকর্তাদের একাংশের ধারণা, ওই সব আগ্রহী সংস্থার মধ্য থেকে একটিকে বেছে নেওয়া সরকারি রীতিরেওয়াজের সঙ্গে মানানসই নয়। তাই দরপত্র ডাকতে হচ্ছে রাজ্যকে।