ভুল হয়ে গেছে বিলকুল!
পঞ্চম ও সপ্তম শ্রেণি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পড়ানো হলেও ষষ্ঠ ও অষ্টমে তা ছিল না। সেই ‘ভুল’ শুধরে নিয়ে, শিক্ষাবর্ষের মাঝবরাবর এসে ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যক্রমে ইসলামের একটি করে কবিতা যুক্ত করল রাজ্য সরকার। তাদের মতে, সব শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরই নজরুলের কবিতা পড়া দরকার। তাই দেরিতে হলেও ওই দুই শ্রেণিতে নজরুলের কবিতা যোগ করা হচ্ছে।
সরকারি সূত্রের খবর, পঞ্চম ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যক্রমেও নজরুলের কবিতা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জুনে। কোন কোন কবিতা সংযোজিত হবে, তা-ও সেই সময়েই জানানো হয়। শিক্ষা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চলতি মাসে কবিতাটি পড়ুয়াদের পড়ানোর কথা। কিন্তু অনেক স্কুলই এখনও পর্যন্ত সে-কথা জানে না। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য জানান, কবিতা দু’টি সংযোজিত অংশ হিসেবে সর্বশিক্ষা অভিযানের জেলা প্রকল্প আধিকারিকের অফিসে পাঠানো হয়েছে। সেটি সেখান থেকেই স্কুলে স্কুলে পাঠানোর কথা। কিন্তু কেন এখনও অনেক স্কুল তা পায়নি, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই কারও কাছেই।
শিক্ষাবর্ষের অর্ধেকেরও বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে এই সংযোজনের কারণ কী?
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, মে মাসের শেষে তিনি শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অনেকেই তাঁর কাছে প্রশ্ন করেন, ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে নজরুলের কবিতা নেই কেন? এই ‘ভুল’ শোধরানোর জন্যই সংযোজনের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
পাঠ্যক্রম তৈরি করেছে রাজ্য সরকারেরই নিযুক্ত স্কুল পাঠ্যক্রম কমিটি। প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম, নবম থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এই সব স্তরের পাঠ্যবইয়েই নজরুলের রচনা আছে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রমে অন্য অনেক কবির রচনা আছে। কিন্তু ওই দুই শ্রেণির পাঠ থেকে থেকে নজরুলকে বাদ রাখা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত ওই দু’টি শ্রেণির পাঠ্যক্রমেও নজরুলকে যুক্ত করা হয়। এই ব্যাপারে পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদারের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁর টেলিফোন বেজে গিয়েছে। এসএমএস-এরও জবাব মেলেনি।
দু’টি শ্রেণির পাঠ্যক্রম থেকে নজরুলকে বাদ রাখাটা ‘ভুল’ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর দাবি, এত দিনে সেই ভুলটাই শুধরে নেওয়া হল। তবে সরকারেরই একটি সূত্রের খবর, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই এই সংযোজন। সংখ্যালঘু ভাবাবেগকে সন্তুষ্ট করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে ওই সূত্রের দাবি। যদিও শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, এ-সবই ভিত্তিহীন জল্পনা।