মেদিনীপুরে সভার আগে মোদীকে বঞ্চনার খোঁচা রাজ্যের

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৫:০৬
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। —ফাইল ছবি

কৃষক কল্যাণ সমাবেশে যোগ দিতে আগামী সোমবার রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সে দিন মেদিনীপুরের সভায় ধানের সহায়ক মূল্য বাড়ানো থেকে শুরু করে কৃষিক্ষেত্রে তাঁর সরকার যে সব প্রকল্প গ্রহণ করেছে, মোদী সেগুলি তুলে ধরবেন বলে জানাচ্ছে বিজেপি।

Advertisement

কিন্তু রাজ্য সরকারের অভিযোগ, মুখে কৃষক কল্যাণের কথা বললেও পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য বরাদ্দ প্রতি বছর কমিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। গ‌োদের উপরে বিষফোড়ার মতো টাকা আসছে দেরিতে, এমনকি বরাদ্দ টাকার সবটা দেওয়াও হচ্ছে না। ফলে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উদাহরণ দিয়ে রাজ্যের কৃষি কর্তাদের একাংশ বলেন, কৃষি ক্ষেত্রের সামগ্রিক বিকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা। বীজ থেকে আবহাওয়া, কৃষি সরঞ্জাম থেকে আধুনিক চাষ— সব ক্ষেত্রেই এই প্রকল্পের আওতায় কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ইউপিএ আমলে প্রকল্পটি চালু করা হয়। মোদী ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করেননি। কিন্তু প্রতি বছরই রাজ্যের বরাদ্দ কমিয়ে চলেছেন।

Advertisement

পূর্ব ভারতে সবুজ বিপ্লব আনতে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে মোদী সরকার। পূর্বাঞ্চলের চার-পাঁচটি রাজ্য এই খাতে টাকা পায়। চাষের এলাকা, জমির উর্বরতা, উৎপাদনশীলতা এবং চাষির প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে সেই টাকা খরচ হওয়ার কথা। এই খাতেও প্রতি বছর টাকা কমাচ্ছে কেন্দ্র। বরাদ্দ টাকা পেতেও বছর গড়িয়ে যাচ্ছে।

চিরাচরিত ফসল ছেড়ে চাষিরা যাতে নতুন অর্থকরী ফসলের দিকে ঝোঁকেন সে ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু তাতে সাকুল্যে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ হয়েছে কোটি টাকার কিছু বেশি। কৃষি কর্তাদের বক্তব্য, এই সামান্য টাকায় কি চাষিদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ সম্ভব? একই ভাবে গমের ধসা রোগ, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস ঠেকাতেও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আসেনি।

কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর জেনে রাখা উচিত, এ রাজ্যের চাষিরা ভালই আছেন। এখানে চাষিরা আত্মহত্যা করেন না। প্রধানমন্ত্রী যদি রাজ্যের বরাদ্দ টাকা সময়ে পাঠান, তা হলে কৃষক কল্যাণে তা খরচ করা যায়।’’

যা শুনে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘মোদী সরকার কখনও টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাত করে না। যে রাজ্য যেমন কাজ করে সেই অনুপাতে টাকা ভাগাভাগি হয়। অধিকাংশ কৃষি প্রকল্পেই রাজ্য ব্যর্থ।’’

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জবাব, ‘‘কৃষকদের সুবিধার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেছেন তা প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যেও হয়নি। এখানে সোয়া কোটি মানুষকে সম্পূর্ণ নিজের টাকায় ২ টাকা কেজি চাল খাওয়ায় সরকার। যা গুজরাতও ভাবতে পারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন