প্রতীকী ছবি।
শুধু ডাক্তার নয়, রাজ্য জুড়ে নার্সেরও অভাব খুব। কিন্তু নিয়োগে সময় লাগবে অনেক। যোগ্য প্রার্থীও পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় সরকারি হাসপাতালে নার্স-ঘাটতি মেটাতে কর্মরত নার্সদের অবসরের বয়ঃসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার নবান্নে ঘোষণা করেন, সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর করা হয়েছে। নার্সের অভাবের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তির ভিত্তিতে সেবিকা নিয়োগের বন্দোবস্ত হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগে। চুক্তিতে নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রেও বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৩৯ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ বছর করেছে রাজ্য সরকার।
নবান্নের হিসেব, সারা রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে ৪৫ হাজার শয্যা রয়েছে। ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার নার্সের প্রয়োজন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় নার্সের সংখ্যা খুবই কম। ফলে পরিষেবা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। খালি আসনে নার্স নিয়োগ নিয়ে বারবার সরব হয়েছে নার্সদের সংগঠন। সুরাহা হয়নি। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ‘রিক্রুটমেন্ট বোর্ড’ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ তো বটেই। অভাব রয়েছে যোগ্য প্রার্থীরও। তাই নিয়োগ করতে সময় লাগছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার তাগিদেই কর্মরত নার্সদের অবসরের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতে যে-পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল, নার্সদের ক্ষেত্রে সেই পথেই হাঁটছে সরকার। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। চিকিৎসকদের অবসরের বয়স তাই ৬০ থেকে ৬২ এবং চিকিৎসক-শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, নতুন নিয়োগের পরিবর্তে অবসরের বয়ঃসীমা বা়ড়ানোয় ফাঁকা আসনের সংখ্যা অঙ্কের হিসেবে হয়তো কিছু কমবে। কিন্তু পরিষেবার বিশেষ উন্নতি হবে না। কারণ, স্টাফ নার্সের ঘাটতির জেরেই রোগী পরিষেবা সমস্যায় পড়ছে। রোগীর শয্যাপাশের পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্বও থাকে তাঁর। নার্সিং প্রশাসনের প্রথম ধাপ হল স্টাফ নার্স হিসেবে যোগদান। ফলে যে-নার্স অবসর নিচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি স্টাফ নার্স হিসেবে অবসর নিচ্ছেন না। পদোন্নতির সূত্রে তিনি অন্য কোনও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তাই উঁচু স্তরে নার্সের ঘাটতি কিছুটা মিটলেও রোগীর শয্যাপাশের সামগ্রিক পরিষেবার ক্ষেত্রে ফাঁক থেকেই যাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।