অবশেষে মোদীর একদিন আগেই মমতার বাজেট

একই দিনে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বাজেট পেশ হবে বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তাতে কেন্দ্রীয় বাজেটের ‘ওজনে’ রাজ্যের বাজেট ‘চাপা’ পড়ে যেতে পারে বলে চর্চা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাজেটের এক দিন আগে, ৩১ জানুয়ারি রাজ্যের বাজেট পেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

একই দিনে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বাজেট পেশ হবে বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তাতে কেন্দ্রীয় বাজেটের ‘ওজনে’ রাজ্যের বাজেট ‘চাপা’ পড়ে যেতে পারে বলে চর্চা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাজেটের এক দিন আগে, ৩১ জানুয়ারি রাজ্যের বাজেট পেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

বিধানসভায় বৃহস্পতিবার কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠকে বাজেট অধিবেশনের সূচি ঠিক হয়ে গিয়েছিল। ঠিক হয়েছিল ১ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টায় রাজ্য বাজেট পেশ হবে। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অন্য অনুষ্ঠানে। হঠাৎই পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিরোধী নেতাদের ফোন করে জানান, ১ফেব্রুয়ারি নয়। বাজেট পেশ হবে ৩১ জানুয়ারি, বিকেল তিনটেয়! সন্ধ্যার মুখে তড়িঘড়ি বিধানসভায় ফিরে স্পিকার আবার ৩১ তারিখ বাজেটের জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত সারেন। ঠিক হয়, বাজেটের নতুন সূচি অনুমোদন করানোর জন্য শনিবার ছুটির দিনে ফের বিএ কমিটির বৈঠক বসবে।

হঠাৎ এমন রদবদল কেন? সরকারি ভাবে কোনও কারণ জানানো হয়নি। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, বাজেট এখন আর শুধু অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার মাধ্যম নয়। বাজেট এখন রাজনৈতিক বার্তারও হাতিয়ার। ফলে কেন্দ্রের থেকে এক দিন আগে সেই বাজেট পেশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য পৌঁছে দিতে চাইছেন। কেন্দ্রের সঙ্গে একই দিনে বাজেট হলে প্রচারের নিরিখে কেন্দ্রীয় বাজেটের চাপে রাজ্যের বক্তব্য অনেকটাই ‘ম্রিয়মান’ হয়ে পড়ত। তাই এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পরিষদীয় মন্ত্রী বাজেট এগিয়ে নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু করেন।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বুধবার গভীর রাতে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকুরিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এ দিন সন্ধ্যায় বিধানসভা থেকে বেরিয়ে তাঁকে দেখতে যান। তিনিই অর্থমন্ত্রীকে জানান বাজেট এক দিন এগিয়ে এসেছে! অন্যদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে দেখতে যান স্পিকার।

বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে এ দিন সর্বদল এবং বিএ কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু অধিবেশনে বিরোধীদের দাবি যে ভাবে মানা হয় না, তার প্রতিবাদে সর্বদল বৈঠকে তাঁদের যাওয়া অর্থহীন বলে স্পিকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন বিরোধী নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘মিডিয়া সেন্টারে আমাদের সাধারণ একটা সাংবাদিক সম্মেলন করতেও আগাম অনুমতি নিতে হয়। অথচ পরিষদীয় মন্ত্রী নিজের ঘরে বসেই ক্যামেরার সামনে সাংবাদিক বৈঠক করেন!’’

বাজেট ৩১ তারিখ বিকেল তিনটেয় ঠিক হওয়ায় ওই দিন তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকও এগিয়ে আনা হয়েছে বেলা সাড়ে ১২টায়। আলিপুরের উত্তীর্ণ মুক্তমঞ্চে প়ঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে রাজ্যের সব ব্লক ও পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তৃণমূল নেত্রী বৈঠক করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন