West Bengal Lockdown

পুলিশকে সরিয়ে স্টেশন থেকে পালালেন শ্রমিকরা

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে গোলমাল হয়েছে অন্যত্রও। গ্রামে ফিরে তাঁরা কোথায় থাকবেন তা নিয়ে শনিবার সকালে দুই পাড়ার মধ্যে গোলমাল বাঁধে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানার তুলসিবেড়িয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ০২:৩১
Share:

ছবি: রয়টার্স।

পুলিশকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে রামপুরহাট স্টেশন চত্বর থেকে পালালেন শ’দেড়েক পরিযায়ী শ্রমিক। কেরল থেকে অসম যাওয়ার ট্রেনটি শনিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাটে পৌঁছলে ওই শ্রমিকেরা নেমে পড়েন। স্বাস্থ্যপরীক্ষা না করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের ধাক্কা মেরে পালান ওই শ্রমিকরা। পুলিশ জানায়, তাঁরা সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।

Advertisement

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে গোলমাল হয়েছে অন্যত্রও। গ্রামে ফিরে তাঁরা কোথায় থাকবেন তা নিয়ে শনিবার সকালে দুই পাড়ার মধ্যে গোলমাল বাঁধে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানার তুলসিবেড়িয়ায়। অভিযোগ, ইটবৃষ্টি ও বোমাবাজি হয়। ভাঙচুর হয় ঘরবাড়ি। চার জন আহত হন। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আশিস মৌর্য বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

সমস্যা তৈরি হয় ট্রেনের রুট বদল নিয়েও। ২৮ মে ভদোদরা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে রওনা দেওয়া ট্রেনের রুট ছিল খড়্গপুর, বাঁকুড়া, মালদহ হয়ে কোচবিহার। ট্রেন মাঝপথে ঘুরিয়ে বিহারের পূর্ণিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে যেতে শুরু করে। ভদোদরা থেকে শ্রমিকদের ট্রেনে চাপানোর বিষয়টি দেখভাল করছিলেন এআইটিইউসি নেতা তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘হাজার খানেক লোক খড়্গপুরে নামত। এ ভাবে মাঝপথে ট্রেন ঘুরিয়ে দিলে ওই মানুষগুলি কোথায় যাবে, কী খাবে, কী ভাবে বাড়ি পৌঁছবে কেউ জানে না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘দরজা খুলুন, আমি কোভিড রোগী!’

আরও পড়ুন: লকডাউন যৌক্তিক, কিন্তু ধাপে ধাপে তোলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

উত্তরবঙ্গের মালদহ স্টেশনে এ দিন ১৪টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন থামে। শ’পাঁচেক শ্রমিক নামেন। দুই দিনাজপুরের শ্রমিকরাও তাতে ছিলেন। স্টেশনে কারও স্বাস্থ্যপরীক্ষা বা লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে অভিযোগ। হাতে কালি লাগিয়ে বাসে তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসন জানায়, সবাইকেই কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। পরে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এনজেপিতে ৬টি ট্রেনে ২০৯ জন আসেন। কয়েক জনের দাবি, তাঁদের ভাড়া দিতে হয়েছে। যদিও তা অস্বীকার করেন রেল কর্তৃপক্ষ।

১২ ঘণ্টা দেরিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এ দিন বিশেষ ট্রেন বহরমপুরে পৌঁছয় বিকেল সাড়ে চারটেয়। একটু পরেই শুরু হয় বৃষ্টি। স্টেশন থেকে ৯২৯ জন যাত্রী যান বহরমপুর স্টেডিয়ামে। গোটা স্টেডিয়ামে একমাত্র তাঁবু স্বাস্থ্যকর্মীদের। দশ জন করে যাত্রী সেখানে দাঁড়াচ্ছিলেন স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। তাঁবুতে জায়গা পান অল্প কয়েক জন শ্রমিক। তাতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মাথায় ওঠে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর বলেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে না বলে বেশি তাঁবু স্টেডিয়ামে করা হয়নি।”

শুক্রবারের পরে রুট সম্প্রসারণের জেরে শনিবারও আগের তুলনায় কম যাত্রী নেমেছেন খড়্গপুরে। এ দিন ১৫টি ট্রেন দাঁড়িয়েছে খড়্গপুরে। তবে রুট সম্প্রসারিত হওয়ায় দূরের যাত্রী এ দিন বেশি নামেননি। শুক্রবার রাত থেকেই শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে আসা যাত্রীদের হাতে কালি লাগানোও শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন