উপগ্রহ-চিত্র তন্নতন্ন করে খুঁজছিলেন হাওয়া অফিসের আবহবিদ। যদি কোথাও মেঘপুঞ্জের দেখা মেলে! তা হলে অন্তত ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া যেত।
কিন্তু কোথায় কী? উপগ্রহ-চিত্রে দেখা মেলেনি মেঘের। ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস তো নেই-ই। উল্টে মিলেছে আরও ভোগান্তির ইঙ্গিত। ‘‘আগামী কয়েক দিন ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তেমন নেই। উল্টে গরম বাড়বে,’’ বলছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস।
কয়েক দিন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে গরমের সঙ্গে সঙ্গে ঝড়বৃষ্টিও হচ্ছিল। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলেও কলকাতার তাপমাত্রা তেমন ভাবে বাড়ছিল না। কিন্তু আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, সোমবার থেকেই পারদ চড়তে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
কেন?
গণেশবাবু জানান, বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে গরম হাওয়া ঢুকছে। তার ফলেই পারদ ঊর্ধ্বমুখী। আগামী কয়েক দিনে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। হাওয়া অফিসের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহে বাঁকুড়া-সহ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির কোথাও কোথাও দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে।
আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ জানান, গরমকালে তাপমাত্রা বাড়লেই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ে। গরমে বাতাসের জলীয় বাষ্প গরম হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে ওঠে এবং সেখানে তাপমাত্রা কম থাকায় তা দ্রুত ঠান্ডা হয়ে উল্লম্ব বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে। সেই মেঘ থেকেই ঝড়বৃষ্টি হয়। বাংলায় যাকে বলা হয় কালবৈশাখী। কিন্তু হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, চলতি সপ্তাহে তেমন জোরালো কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই। কারণ, ঝ়ড়বৃষ্টির জন্য বাতাসে যে-পরিমাণ জলীয় বাষ্প প্রয়োজন, আপাতত তা নেই। কয়েক দিন আগে বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকছিল। আবহাওয়ার খেয়ালিপনায় তা-ও উধাও হয়ে গিয়েছে!
এ দিন অবশ্য বাতাসে আর্দ্রতা মোটামুটি মালুম হয়েছে। পথেঘাটে বেরিয়ে ঘেমেনেয়ে ভিজে গিয়েছে জামাকাপড়। সকালের ব্যস্ত সময়ে এসি মেট্রোতেও ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি কাটেনি। আজ, মঙ্গলবার থেকে বাতাসে শুকনো ভাব বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।