State News

অবরোধে বেসামাল রেল, ভোগান্তি জনতার

ছেলেমেয়ের স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় দার্জিলিঙে বেড়াতে যাবেন বলে কেউ সকালেই সপরিবার বেরিয়ে পড়েছিলেন হাওড়া স্টেশনের উদ্দেশে। চাকরির পরীক্ষায় তাড়াতাড়ি পৌঁছনোর জন্য বোলপুর থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু ১০ দফা দাবিতে রেল রোকো আন্দোলনের জেরে সোমবার গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেন না ওঁদের কেউই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

অবরোধ: পুরুলিয়ার কাঁটাডি স্টেশনে রেললাইনে বসে বিক্ষোভ। সোমবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

কারও বৃদ্ধ বাবাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল কলকাতায়। ছেলেমেয়ের স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় দার্জিলিঙে বেড়াতে যাবেন বলে কেউ সকালেই সপরিবার বেরিয়ে পড়েছিলেন হাওড়া স্টেশনের উদ্দেশে। চাকরির পরীক্ষায় তাড়াতাড়ি পৌঁছনোর জন্য বোলপুর থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু ১০ দফা দাবিতে রেল রোকো আন্দোলনের জেরে সোমবার গন্তব্যে পৌঁছতে পারলেন না ওঁদের কেউই।

Advertisement

একসঙ্গে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বিভিন্ন স্টেশনে রেল অবরোধ করে আদিবাসী সংগঠন। তার জেরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভুগলেন নিত্যযাত্রী ও পর্যটকেরা। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ট্রেন বাতিল হওয়ায় হাওড়ায় চলল বিক্ষোভ। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরোধ চলায় বেশি রাত পর্যন্ত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি বলে রেলের
খবর। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়া যাত্রীদের অভিযোগ, রেল সহযোগিতা তো করেইনি। তার উপরে হাওড়া স্টেশনে যাত্রীদের ঠেকাতে আরপিএফ-কে এগিয়ে দেওয়া হয়। রেল এই সব অভিযোগ মানতে চায়নি। রেল সূত্রে বলা হয়, অবরোধের ফলে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। কিছু ট্রেন অন্য পথে ঘুরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

সকাল ৬টায় অবরোধ শুরু হয় বিহারের কিষানগঞ্জ এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাঁকি ও আদিনা স্টেশনে। উত্তর-পূর্ব ভারত ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। থমকে যায় হাওড়ামুখী ডাউন শতাব্দী, বালুরঘাট-কলকাতা এক্সপ্রেস। অবরোধ শুরু হয় আদ্রা-আসানসোল শাখার মধুকুণ্ডা, আদ্রা-মেদিনীপুর শাখার ইন্দ্রবিল, আদ্রা-চাণ্ডিল শাখার কাঁটা়ডিতেও। নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী-সহ চারটি দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রাপথ বদলে দেওয়া হয়। কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল শাখায় বিকল্প পথ না-থাকায় বাতিল করা হয় বহু ট্রেন।

Advertisement

বেলা ২টো ১৫ মিনিটে হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল। বেলা প্রায় পৌনে ৩টে নাগাদ ট্রেনটি বাতিল করে রেল। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীরা। তাঁদের বেশির ভাগই উত্তরবঙ্গে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। যাত্রীদের অভিযোগ, রেল সকালেই ট্রেন বাতিলের কথা জানালে বিকল্প রাস্তা খোঁজা সহজ হত। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র জানান, ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিশেষ ট্রেন দিয়ে ভোগান্তি কমানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত রেক না-থাকায় তা হয়ে ওঠেনি।

যাত্রীদের নাজেহাল করে এ ভাবে অবরোধ কেন? অবরোধকারীদের যুক্তি, তাঁদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কোনও সরকারই তাতে কর্ণপাত করছে না। সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই অবরোধ। ১২ ঘণ্টার আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলেও যাত্রীদের কথা ভেবে বেলা ২টোতেই কোথাও কোথাও অবরোধ তুলে নেওয়া হয় বলে আন্দোলনকারীদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন