ভর্তির পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। ওই পরীক্ষায় সফলদের মেধা-তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে যথারীতি। কিন্তু তার পরে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তিই নেওয়া হচ্ছে না। তাই শুরু হয়নি ক্লাসও।
এই অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজে। ২১ জানুয়ারি ওই কলেজ ছাড়াও হাজরা আইন কলেজ, সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজে স্নাতকোত্তরে আইন (এলএলএম) পড়ার জন্য ভর্তির পরীক্ষা নেওয়া হয়। ফল বেরোয় ২৭ এপ্রিল। ৭ মে ওই তিন কলেজে ভর্তির কাউন্সেলিং হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে।
কিন্তু যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজের কোনও প্রতিনিধিই সেখানে উপস্থিত হননি। কলেজে ভর্তির জন্য যাঁদের নাম মেধা-তালিকায় রয়েছে, পরের দিন তাঁদের কলেজে দেখা করতে বলা হয়। কিন্তু কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে না। অথচ অন্য দু’টি কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে ক্লাসও শুরু হয়ে গিয়েছে।
যোগেশচন্দ্র কলেজ সূত্রের খবর, মেধা-তালিকার উপর দিকে থাকা এক প্রার্থীর ব্যাপারেই কর্তৃপক্ষের আপত্তি। কারণ সেই প্রার্থী ওই কলেজেই এলএলবি পড়েছেন। তিনি কলেজের প্রাক্তন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা। দু’-দু’বার কলেজের টিএমসিপি নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদের সভাপতি ছিলেন। এখন আদালতে প্র্যাক্টিস করছেন। তিনি তৃণমূল আইনজীবী সেলের রাজ্য কমিটির সদস্য। কলেজ সংক্রান্ত একটি মামলায় তিনি দুই শিক্ষিকার পক্ষে মামলা লড়েছিলেন। সেই মামলায় কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষা এবং প্রাক্তন অধ্যক্ষের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। কলেজ সূত্রের খবর, সেই কারণেই ওই ছাত্রকে ভর্তি নিতে কর্তৃপক্ষের আপত্তি। কলেজের তরফে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে।
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নীল বসু মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে চাপান-উতোর চলছে। আমাদের দাবি, অবিলম্বে মেধা-তালিকা মেনে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। অধ্যক্ষ নিজের ব্যক্তিগত বিষয় যদি কলেজ পরিচালনায় চাপাতে চান, তা হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ নীলেরা এ দিন তাঁদের বক্তব্য ই-মেল করে উপাচার্যকে জানিয়েছেন।
কলেজের অধ্যক্ষা সুনন্দা গোয়েনকা এ দিন বলেন, ‘‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় জানালেই আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে দেব। এর বেশি কিছু বলব না।’’ এ দিন কলেজের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে কিছু জানি না। খোঁজ নেব।’’