চলছে বায়ুসেনার মহড়া। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
গভীর রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে পরপর নামল বায়ুসেনার দু’টি এএন-৩২ বিমান। তাতে শুয়ে ৪৫ জন গুরুতর জখম জওয়ান। তাঁদের নিয়ে পরের পর অ্যাম্বুল্যান্স ছুটল আলিপুর কম্যান্ড হাসপাতালে। আহতদের শুশ্রূষায় যাতে দেরি না-হয়, তাই গোটা রাস্তা ‘গ্রিন করিডর’ করে রেখেছিল কলকাতা পুলিশ। না-থেমে ৪০ মিনিটে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা পা়ড়ি দিল ওই সব অ্যাম্বুল্যান্স।
দু’টি বিমানই এসেছিল অসমের ছাবুয়া বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে। তবে বাস্তবে ছাবুয়ায় কোনও বিপর্যয় বা হামলা হয়নি। যদি হয়, কী ভাবে আহতদের কলকাতায় উড়িয়ে এনে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব, তারই মহড়া চলে বৃহস্পতিবার রাতে। বায়ুসেনা জানিয়েছে, গোটা মহড়াই নির্বিঘ্নে হয়েছে। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়েও কোনও ফাঁক ছিল না।
চিন-পাকিস্তানের বিপদকে মাথায় রেখে দেশ জুড়ে ‘গগনশক্তি’ নামে স্থলসেনা ও নৌসেনার সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে বিশেষ মহড়া শুরু করেছে বায়ুসেনা। ছাবুয়ার মহড়ায় ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং এয়ার চিফ মার্শাল বীরেন্দ্র সিংহ ধানোয়া। দিনের বেলা সুখোই-৩০, সি-১৭ গ্লোবমাস্টার বিমানের অভিযানের পরে রাতে এই মহড়া হয়েছে। বায়ুসেনা-কর্তারা জানান, যুদ্ধ বাধলে বা ভূকম্পের মতো বিপর্যয় ঘটলে কী ভাবে উদ্ধারকাজ করা হবে, তা দেখতেই এই মহড়া। সেনার একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চিনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতকে মাথায় রেখেই এই ধরনের মহড়ার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।
বায়ুসেনা জানায়, পাহাড়ি এলাকায় যুদ্ধের সময় কী ভাবে দ্রুত বাহিনী পৌঁছনো যায়, তারও মহড়া হয়েছে। মূলত উত্তর ভারতের পাহাড়ে থাকা স্থলসেনার জওয়ানদের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পৌঁছে দেওয়া হয়। উত্তর-পূর্ব থেকে জওয়ানদের নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরের পাহা়ড়ি এলাকায়। এই মহড়ায় সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস, এএন-৩২ বিমান এবং এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে।