প্রতীকী ছবি।
স্টেশন চত্বরেই ট্রাফিক পুলিশের প্রিপেড বুথ। সেখানে ঝোলানো আছে জায়গা অনুযায়ী গাড়িভাড়ার তালিকা। ছোট-বড় গাড়ি মিলিয়ে গ্যাংটক, দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকের মতো জায়গায় সরকারি দর ২-৩ হাজারের মধ্যে। কিন্তু ভরা পর্যটন মরসুমে সেই বুথে দাঁড়িয়ে গাড়ি মেলা ভার। এনজেপি স্টেশন চত্বর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অজস্র গাড়ির দর কম সে কম ৫-৬ হাজার টাকা। কোনও ক্ষেত্রে হয়তো তিন গুণও।
পর্যটকদের প্রশ্ন, কেন এত ভাড়া? কারও যুক্তি, গত বারে পাহাড়ে গোলমালের পরে ব্যবসা কমে গিয়েছিল, তাই লাভ তুলতে চাইছেন গাড়িচালকরা। কেউ বলছেন, তেলের দাম বাড়ার জন্য এই অবস্থা। গাড়ি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, গোলমাল অন্য জায়গায়। প্রিপেড বুথে যে তালিকা ঝুলছে, তা ২০০৮ সালে তৈরি করা। ৮ বছরে সেই ভাড়া বদলায়নি। তাই যে যেমন ইচ্ছে ভাড়া চাইছে।
সমীর ঘোষ বা দেবলীনা সামন্তদের তো এনজেপি-তে নেমে ভাড়া দেখে মাথা ঘুরে গিয়েছে। বললেন, ‘‘বেড়ানোর অনেক টাকাই গাড়ি ভাড়ায় চলে যাচ্ছে।’’ তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শুনেছি প্রতি বছর এখানে এমন হয়। কেউ কী দেখার নেই?’’
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখেছেন ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের যুগ্ম সম্পাদক নীলাঞ্জন বসু। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরীও পরিবহণ দফতরের সচিবের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেছেন।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি। দেখি কী করা যায়!’’ পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আশ্বাস, ‘‘আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তাকে পর্যটকদের সমস্যা খতিয়ে দেখতে বলব।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রিপেড ট্যাক্সি বুথের সমস্যা এ মাসের গোড়াতেই জিটিএ চেয়ারম্যান, জেলাশাসক ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পরিবহণ কমিশনার। তাতে কিছু সমস্যা মিটেছে।’’
কিন্তু তা এই গ্রীষ্মে হবে কি? পর্যটকরা তো বটেই, তেমন সম্ভাবনা দেখছেন না গাড়ি ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের কথায়, নতুন ভাড়ার তালিকা না হওয়া অবধি এই সমস্যা মিটবে না। সেটা কবে হবে, হলফ করে দিন কেউ বলতে পারছে না।