ঘনঘটা: বেলা ৩টে ১৫ মিনিট। মেঘ জমেছে হাওড়া ব্রিজের মাথায়। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রথমে আকাশ ছেয়ে গেল মিশমিশে কালো মেঘে। তার পরে উঠল ঝোড়ো হাওয়া। একটু পরেই নামল বৃষ্টি।
গুমোট গরমে এই বৃষ্টি জেলা ও মহানগরীতেও কিছুটা স্বস্তি এনেছে। কিন্তু উদ্বেগ বাড়িয়েছে ঘনঘন বজ্রপাত। রবিবার বজ্রাঘাতে হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে মৃত্যু হয়েছে ন’জনের। এর মধ্যে হাওড়ায় আম কুড়োতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা যায় চারটি বালক। এই নিয়ে চলতি মরসুমে বজ্রপাতে অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হল। এ দিন হাওড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছে এক কিশোর।
ঝড়বৃষ্টিতে জীবন ও সম্পত্তিহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর আশ্বাস, রাজ্য সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে।
বৃষ্টির সঙ্গে কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৪২ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইলেও আবহাওয়া দফতর এটাকে কালবৈশাখী বলছে না। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, এই আবহাওয়ার মূলে আছে হরিয়ানা থেকে নাগাল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা। এর ফলে হরিয়ানা, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, দক্ষিণ বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও মেঘালয়ে ঝড়বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হচ্ছে শিলাবৃষ্টিও। ওই অক্ষরেখা দুর্বল হয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এত ঘনঘন ঝড়বৃষ্টি কেন? মৌসম ভবন জানাচ্ছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে জম্মু-কাশ্মীর দিয়ে পরের পর পশ্চিমি ঝঞ্ঝা ঢুকছে। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা তেমন বাড়তে পারছে না। তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখার অনুকূল পরিস্থিতি। ফলে কোথাও উঠছে ধুলোঝড়, কোথাও হচ্ছে বৃষ্টি।