প্রতীকী ছবি।
আশা ছিল জিএসটি রোজগার বাড়াবে। কিন্তু বছর শেষে ফল ঠিক উল্টো। সামগ্রিক আয় কম হওয়ায় কেন্দ্র থেকে রাজ্যের প্রাপ্য করের টাকার পুরোটাও এ বার মিলল না। মার্চে দিল্লি থেকে এই খাতে সাড়ে ১০ হাজার কোটি পাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৩৫০০ কোটি টাকা পৌঁছয়নি। কম এসেছে কেন্দ্রীয় অনুদানের টাকাও। ফলে বছর শেষে রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি এবং আর্থিক ঘাটতি সীমাহীন হবে বলে অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন।
কোষাগারের ধাক্কা সামলানোর জন্য ছিল ভরসা ছিল জিএসটি বাবদ মোটা আয়। তাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি। অর্থ দফতরের খবর, জিএসটি বাবদ এ বার রাজ্যের আয় দাঁড়াতে পারে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। জিএসটি চালু করার জন্য রাজ্য ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে। গত আট মাসে ক্ষতিপূরণের ৬০০০ কোটি টাকা এসেছে দিল্লি থেকে। এক অর্থ কর্তার কথায়, ‘‘ক্ষতিপূরণের অংশটুকুই রাজ্যের লাভ।’’ তবে এর মধ্যে কোষাগারের কলেবরে কিছুটা উজ্জ্বল চিত্র মদ বিক্রি এবং জমি-সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন থেকে পাওয়া রাজস্ব। মদ বিক্রি করেই সরকার এ বছর প্রায় ৯০০০ কোটি টাকা আয় করতে চলেছে বলে আবগারি দফতর জানিয়েছে। তাতে অবশ্য রাজস্ব ঘাটতি বা আর্থিক ঘাটতি কমার কোনও প্রশ্ন নেই। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় করের থেকে এ বছর রাজ্যের ৪৯ ৫১০ কোটি পাওয়ার কথা ছিল। আর্থিক বছরের শেষ মাসেই পাওয়ার কথা ছিল সাড়ে ১০ হাজার কোটি। সরাসরি এখান থেকেই ৩৫০০ কোটি কম আদায় হচ্ছে। একই ভাবে কেন্দ্রীয় অনুদান বাবদ সংশোধিত বাজেটে অন্তত ৩০ ২৮০ কোটি মিলবে বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ১১ ৭৫০ কোটি এসেছে। এখন অনুদানের টাকাও পুরোটা পাওয়া যাবে
বলে মনে করছেন না অর্থ কর্তারা।
আর তা হলে রাজস্ব ঘাটতি ও আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ লাগামছাড়া হবে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কি কেন্দ্রীয় প্রাপ্যের ব্যাপারে আগাম হিসেব কষেনি? অর্থকর্তাদের একাংশ বলছেন, ২০১৮-১৯ সালের রাজ্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র কেন্দ্রীয় করের টাকা ও অনুদান পুরোটা পাওয়া যাবে ধরে নিয়েই যাবতীয় ঘাটতির হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু সিএজি জানুয়ারিতেই রাজকোষের হিসেবে দেখিয়েছে, ’১৭-১৮ সালে রাজস্ব ঘাটতি ২০ হাজার এবং আর্থিক ঘাটতি ৩০ হাজার কোটি ছাড়াতে পারে। যা চলতি বছরে আরও বাজারি ঋণের পথে রাজ্যকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা নবান্নের।