ওডিশার কয়লা নতুন রেলপথে ঢুকছে বাংলায়

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেল পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু মাত্র ৫১ কিলোমিটার রেললাইনের অভাবে প্রায় ৯০০ লক্ষ টন কয়লা তুলে বাজারজাত করার সম্ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে যেতে বসেছিল। আট বছরের চেষ্টায় ১০০৭ কোটি টাকা খরচ করে ওডিশার সারদেগা ও বরাপালির মধ্যে ওই রেললাইন তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কয়লা উৎপাদক সংস্থা।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৪:৩৯
Share:

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেল পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু মাত্র ৫১ কিলোমিটার রেললাইনের অভাবে প্রায় ৯০০ লক্ষ টন কয়লা তুলে বাজারজাত করার সম্ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে যেতে বসেছিল। আট বছরের চেষ্টায় ১০০৭ কোটি টাকা খরচ করে ওডিশার সারদেগা ও বরাপালির মধ্যে ওই রেললাইন তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কয়লা উৎপাদক সংস্থা।

Advertisement

মহানদী কোল ফিল্ডস বা এমসিএলের উদ্যোগে তৈরি ওই রেলপথ দিয়ে ইব উপত্যকার বসুন্ধরা প্রকল্পের কয়লা দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্গে আসছে এ রাজ্যের কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেও। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খবর, এপ্রিলের শেষে ওই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার পরে এখন রোজ গড়ে ৪০০০ টন কয়লা নিয়ে একটি করে রেক ওডিশা থেকে বাংলায় আসছে।

এত দিন কোলাঘাট, বক্রেশ্বরের মতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঝাড়সুগুদা পেরিয়ে ব্রজরাজনগর থেকে কয়লা আনত। ওই কয়লা আনার জন্য নির্ভর করতে হত দক্ষিণ-পূর্ব মধ্য রেলের উপরে। কিন্তু ওই রেলপথে ট্রেনের চাপ বেশি থাকায় প্রায়ই রেক পৌঁছতে দেরি হত। সেই সমস্যা আর থাকবে না বলেই আশা করা হচ্ছে।

Advertisement

পূর্ব ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে কয়লার বাজার পেতে এ ভাবে ১০০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে রেললাইন পাতার ঘটনা কিছুটা অভিনব। এই পরিকল্পনায় শুধু যে কয়লা উত্তোলক সংস্থা এমসিএলেরই লাভ হবে, তা নয়। কয়লা পরিবহণ করে লাভের কড়ি ঘরে তুলবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলও। পণ্য বহনে অনেকটাই আয় বাড়বে তাদের। সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “লৌহ আকরিক বহন করেই দক্ষিণ-পূর্ব রেল সিংহভাগ আয় করে। এ বার ওই আয়ের ক্ষেত্রে কয়লা পরিবহণের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যাবে।”

ওড়িষার ইব নদী উপত্যকার খনিগুলি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কলকাতা-মুম্বই ট্রাঙ্ক রুটের উত্তরে। সারদেগা ও বরাপালিকে যুক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ৫১ কিলোমিটার রেললাইন ধুতরা এবং ঝাড়সুগুদা স্টেশনকেও যুক্ত করছে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খবর, ওই লাইন তৈরি করার জন্য ২০০৫-’০৬ সালে এমসিএল এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। ২০০৯ সালে অর্থের অনুমোদন আসে। ২০১৩ থেকে ২০১৭-র মধ্যে ওই লাইন তৈরির কাজ শেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। কয়লা উত্তোলক সংস্থার টাকাতেই সাতটি বড় সেতু এবং ৯৭টি ছোট সেতু আছে ওই রেলপথে।

নতুন রেলপথ তৈরি হওয়ায় কয়লা ভর্তি রেক নিয়ে যাওয়া এবং খালি রেক ফিরিয়ে আনা অনেক সহজ হবে। ইঞ্জিনের অভিমুখ বদল করার সময়ও নষ্ট হবে না। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২০-’২১ সাল নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব রেল ওই পথে দিনে ২০-২১টি কয়লার রেক চালাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement