বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দিল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
সারদা, রোজ ভ্যালি-সহ বহু বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার বিচার চলছে। সব লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা এক আদালতে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগও চলছে। তারই মধ্যে এই প্রথম ক্রেতা সুরক্ষা আদালত এমনই এক সংস্থার কর্ণধারকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দিল।
আইকোর নামে ওই সংস্থার মালিক অনুকূল মাইতি এখন ভুবনেশ্বরে, সিবিআইয়ের হেফাজতে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার বিচার চলছে। তার মধ্যেই কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ওই রায়ের প্রতিলিপি ভুবনেশ্বরে সিবিআই আদালতে পাঠানো হয়েছে।
৪০০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অনুকূলকে ২০১৫-র এপ্রিলে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়ার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কানুরঞ্জন দেবনাথ এবং তাঁর স্ত্রী রেখা দেবনাথ ২০১১ সালে অনুকূলের সংস্থায় প্রায় ছ’লক্ষ টাকা গচ্ছিত রাখেন। ২০১৪ সালে সুদ-সহ তা ফেরত পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা ফেরতে না-পেয়ে কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন দেবনাথ দম্পতি।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আবেদনকারীদের জমা রাখা ছ’লক্ষ টাকা ছাড়াও ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত দু’লক্ষ টাকা মেটানোর নির্দেশ দেয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। কিন্তু ওই দম্পতি সেই টাকা পাননি। অনুকূলের বিরুদ্ধে তখন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ওই আদালত। অনুকূলকে গত ২৫ এপ্রিল ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে হাজির করানো হয়। অনুকূল জানান, আদালতের নির্দেশে তাঁর সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাই তাঁর পক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয়।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দুই বিচারক শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং সদস্য শেখ আবুল আনসারের পর্যবেক্ষণ, ওই দম্পতি অনেক আশা করে টাকা রেখেছিলেন। এখন তা ফেরত পেতে আদালতে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এটা অবমাননাকর। তাঁরা অনুকূলকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের এই নির্দেশে খুশি ওই প্রবীণ দম্পতি। তাঁদের কথায়, ‘‘ক্ষতিপূরণের টাকা না-পেলেও এই ধরনের প্রতারকদের কঠোর শাস্তি হোক, এটাই চাই আমরা। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আসা সার্থক হয়েছে আমাদের।’’