কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলাতেও কি ফের বোঝাপড়া? প্রথম পরীক্ষা মহেশতলায়

সাম্প্রতিক কালে উলুবেড়িয়া লোকসভা ও নোয়াপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা চেয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

হায়দারাবাদ পার্টি কংগ্রেসে সদ্য সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে বোঝাপড়া করার। সেই লাইন মেনে এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলাতেও ফের সমঝোতার রাস্তায় তারা ফিরবে কি না, তার প্রথম পরীক্ষা হতে চলেছে মহেশতলা বিধানসভার উপনির্বাচনে। যে উপনির্বাচনের জন্য শুক্রবারই তৃণমূল প্রার্থী করেছে প্রয়াত বিধায়ক কস্তুরী দাসের স্বামী ও মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাসকে।

Advertisement

সাম্প্রতিক কালে উলুবেড়িয়া লোকসভা ও নোয়াপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা চেয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস। রাজ্যসভার সর্বশেষ ভোটেও সীতারাম ইয়েচুরি প্রার্থী হলে তাঁদের সমর্থন করতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কিন্তু তখনও কংগ্রেস-প্রশ্নে সিপিএমের অভ্যন্তরের বিতর্ক মেটেনি। যে বিতর্ক শেষে এ বার ফয়সালা হয়েছে হায়দরাবাদে। যদিও সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলে রেখেছেন, ভোটের সময় এলে যেখানে যেমন পরিস্থিতি, তা দেখে নির্বাচনী কৌশলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। মহেশতলাতেই প্রথম সেই সুযোগ পাচ্ছে আলিমু্দ্দিন।

অধীরবাবু শুক্রবারও বলেছেন, ‘‘মহেশতলা কেন্দ্রে আগে সিপিএম লড়েছে। তারা যদি সমর্থন চেয়ে আলোচনা করতে চায়, আমাদের আপত্তি নেই!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এই রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি, এই দুই শক্তির বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। মহেশতলা কেন্দ্রে কী করা হবে, তা নিয়ে অবশ্য এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ তবে আলিমুদ্দিনের নেতাদের উৎসাহ বাড়াচ্ছে কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে দলের অবস্থান। সেই রাজ্যে কিছু কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। বাকি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে যেখানে যে শক্তিশালী, তাকে সমর্থন করা হবে বলে অবস্থান নিয়েছে পলিটব্যুরো। অর্থাৎ কংগ্রেসকে সমর্থন করতেও সেখানে সিপিএমের বাধা নেই।

Advertisement

তবে পার্টি কংগ্রেসে রাজনৈতিক প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরের দিনই দলের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটের ব্যাখ্যার জেরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল বিস্তর! পলিটব্যুরোর আর এক সদস্য, বাংলার মহম্মদ সেলিমকে দিয়ে বৃন্দার ‘বিভ্রান্তি’ খারিজ করানো হয়েছিল। দলের একাংশ যে এখনও রাজনৈতিক লাইনে পরিবর্তন নিয়ে জলঘোলা পাকাতে ওস্তাদ, অভিজ্ঞতা থেকেই তা মাথায় আছে বাংলার নেতাদের। তাঁরা তাই কংগ্রেসের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় বোঝাপড়ার কৌশল তৈরি করতে চান। যাতে দেখানো যায়, সাংগঠনিক কারণেই কংগ্রেস প্রার্থী দিল না। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘বিভ্রান্তি, বিতর্ক অনেক হয়েছে! এ বার মেপে পা ফেলতে হবে!’’

তৃণমূল নেত্রী অবশ্য মহেশতলার ‘দায়িত্ব’ দাস পরিবারের হাতেই রাখতে চেয়েছেন। প্রার্থী দুলালবাবু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি ও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শ্বশুর। শোভনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রত্নার বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা চলছে। রত্নার সঙ্গে শোভনের ‘দুর্ব্যবহার’ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু দিন আগেই মুখ খুলেছিলেন দুলালবাবু। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘নেত্রীর অনুমোদনের পরেই সর্বসম্মত ভাবে দুলাল দাসকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন