তৃণমূলের মিছিলে হেঁটে ‘গর্বিত’ স্বাস্থ্যকর্তা

রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের পথে সেই মিছিলেই পা মেলালেন দুই সরকারি চিকিৎসক। একজন গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৫:০৭
Share:

মিছিলে ওঁরা (ডানদিকে সাদা জামায়)। —নিজস্ব চিত্র।

পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মহামিছিল বের করেছিল তৃণমূল। রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের পথে সেই মিছিলেই পা মেলালেন দুই সরকারি চিকিৎসক। একজন গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। অন্যজন গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে স্কুল হেলথ টিমের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক আকাশ মাহাতো।

Advertisement

আকাশবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে মিছিলে হেঁটে রীতিমতো গর্বিত বিএমওএইচ খগেন্দ্রনাথবাবু। তাঁর সাফ কথা, “বাংলার তথা বিশ্ববাংলার কাজ করতে পেরে, দেশের কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।’’

ওই দু’জনই তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য। কিন্তু সরকারি চিকিৎসক হয়েও শাসকদলের রাজনৈতিক মিছিলে তাঁরা হাঁটায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে চিকিৎসক মহলে। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম-এর রাজ্য সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “সার্ভিস রুল অনুযায়ী কোনও সরকারি চিকিত্সক বা কর্মী রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন না। এতে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।” তৃণমূল প্রভাবিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি গৈরিক মাজি অবশ্য ‘‘গ্যাংটকে বেড়াতে এসেছি, ভাল শুনতে পাচ্ছি না’’ বলে ফোন কেটে দিয়েছেন।

Advertisement

কয়েক মাস আগেই ঝাড়গ্রামের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি নির্দেশ জারি করে জানিয়েছিলেন, বিএমওএইচদের সর্বক্ষণ ব্লক হাসপাতাল চত্বরের আবাসনে থাকতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, ওই দুই চিকিত্সক কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই হাসপাতালের ডিউটি ছেড়ে তৃণমূলের মিছিলে হেঁটেছেন।

ঝাড়গ্রাম শহরে এ দিনের মহামিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি, সাংসদ উমা সরেন, জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের দুই কার্যকরী সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো ও সুকুমার হাঁসদা প্রমুখ। মিছিলের একেবারে সামনে তৃণমূল নেতাদের কাছাকাছি দুই চিকিৎসককে হাঁটতে দেখা যায়। তৃণমূলের ব্যানার ও দলীয় পতাকায় সাজানো মিছিল ঘন্টাখানেক ঝাড়গ্রাম শহরের পথে ঘোরে। পুরো যাত্রাপথেই ছিলেন দুই চিকিৎসক।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝির দাবি, “ওই দুই চিকিৎসক সাংসদের জন্য মিছিলে থাকা মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে ছিলেন।” তাহলে অ্যাম্বুল্যান্স বা জরুরি চিকিৎসার সরঞ্জাম কোথায় ছিল? আর দুই চিকিৎসক যদি মেডিক্যাল টিমের সঙ্গেই থাকবেন, তাহলে তাঁরা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে গলদঘর্ম হয়ে পুরো সময়টা হাঁটলেন কেন? এ বার মেজাজ হারিয়ে অশ্বিনীবাবুর বক্তব্য, “কে মিছিলে যাবেন, কে সাঁতার কাটবেন, সেই সব ব্যক্তিগত খবরও কি আমাকে রাখতে হবে!” আর জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিতবাবু বলেন, ‘‘এ দিন মিছিলে বহু মানুষ হেঁটেছেন। কে বিএমওএইচ, কে সিএমওএইচ তা তো আমি জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন