আলোচনা: সমাবর্তনের আগে কর্মসমিতির বৈঠক। সোমবার বিশ্বভারতীতে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
২৫ মে, সমাবর্তনের আগে কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে আচার্য হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানো হল। সোমবার স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটির দুই সদস্যের নামও চূড়ান্ত করা হয়।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের পরে মোদী প্রধানমন্ত্রী হন। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, তখনও আচার্য হিসেবে মনমোহন সিংহের মেয়াদ শেষ হয়নি। ২০১৫ সালের মার্চে তাঁর মেয়াদ শেষ হলে আচার্য হন নরেন্দ্র মোদী। বিশ্বভারতীর অ্যাক্ট ও স্ট্যাটুড মেনে তিন বছর অন্তর আচার্যের মেয়াদ বাড়ানো হয়। স্বাভাবিক ভাবেই ২০১৮ সালের মার্চে তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। সোমবার কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে ফের তিন বছর বাড়ানো হল আচার্যের মেয়াদ।
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘কর্মসমিতির অনুমোদন অনুযায়ী পরবর্তী তিন বছরের জন্য বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে নরেন্দ্র মোদীই থাকলেন। এ বার এই সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রীর দফতর, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান আয়োগে পাঠানো হবে।’’
বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের খবর, আচার্যের মেয়াদ বাড়াতে এ দিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনকে বিশ্বভারতীর অ্যাক্ট ও স্ট্যাটুড-এ দেওয়া ‘বিশেষ ক্ষমতা’ প্রয়োগ করতে হয়। তার কারণ, কর্মসমিতির বৈঠকে এ দিন চার ‘এক্সটারনাল’ সদস্যের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। কর্মসমিতির ১৩ জন সদস্যের মধ্যে ওই চার ‘এক্সটারনাল’। তাঁরা হলেন সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়, মঞ্জুমোহন মুখোপাধ্যায়, সুজিত ঘোষ ও সখারাম সিংহ যাদব। এঁদের কেউই সোমবারের বৈঠকে ছিলেন না। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, ‘‘এর আগেও একই বিষয় নিয়ে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা আসেননি। সামনেই সমাবর্তন। তার উপরে আবার বিশ্বভারতীর বিভিন্ন পদ এখনও শূন্য, পদোন্নতিও হয়নি। এর থেকে বেশি সঙ্কটের সময় কিছু হতেই পারে না। এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য বিশ্বভারতীর অ্যাক্ট ও স্ট্যাটুড মেনে ‘বিশেষ ক্ষমতা’ প্রয়োগ করতেই পারেন। সেই সূত্রেই এক্সটারনাল সদস্যদের অনুপস্থিতিতেও আচার্যের মেয়াদ বাড়ানো হল।’’ যদিও এ দিনের বৈঠকে প্রাক্তনী হিসেবে শেলী ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসমিতির বৈঠকে এই চার সদস্যের বারবার অনুপস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকসভা ও কর্মিসভার একাংশ। অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘উপাচার্যের প্রত্যেকটি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা সোমবারও আসেননি বলে উপাচার্যকে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হল।’’
এ দিন স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট এবং কর্মসমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দুই প্রতিনিধির নামও ঠিক হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। কোর্ট বৈঠক থেকে এস আয়াপ্পানের নাম অনুমোদিত হয়েছে। তিনি ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি গবেষণা ও শিক্ষাবিভাগের সচিব ও ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইসিএআর) ডিরেক্টর। অন্য দিকে, কর্মসমিতির বৈঠকে মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আদ্যপ্রসাদ পাণ্ডের নাম অনুমোদিত হয়েছে। তিন জন সদস্য নিয়ে সার্চ কমিটি তৈরি হয়। দু’জন অনুমোদিত হলেন। এর পরে রাষ্ট্রপতি এক জনকে অনুমোদন করলেই সার্চ কমিটি তৈরি হয়ে যাবে।
এ দিনের বৈঠকের পরে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও গতি পেল বলে মনে করছে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহল।