বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করতে গিয়ে কাটা পড়েছিল শরিকদের ভাগের আসন। ভোটে তার সুফলও পেয়েছে কংগ্রেস। লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকেই গুরুত্ব দেওয়ার পথে সিপিএম হাঁটলে বামফ্রন্ট অটুট থাকা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল ফরওয়ার্ড ব্লক।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে গোটা রাজ্যে বামফ্রন্টের তরফে জেলা পরিষদের একমাত্র আসনটি জিতেছে ফব-ই। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর-২ ব্লকে মসৃণ বাম ঐক্যের জোরেই ‘প্রহসন’-এর ভোটেও সামান্য ভাল ফল মিলেছে বলে ফব নেতৃত্বের ব্যাখ্যা। দলের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সম্প্রতি ফব-র নেতারা অভিযোগ করেছেন, উত্তর দিনাজপুরের বাকি অংশ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও পুরুলিয়ার মতো জেলায় কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের সমঝোতা হয়েছিল নিখুঁত। অথচ বাম ঐক্য ঠিক ভাবে হয়নি। যার ফলে পুরুলিয়ার মতো জেলায় সিপিএমের সমর্থন পেয়ে কংগ্রেস জেলা পরিষদে তিনটি আসন পেয়ে গিয়েছে কিন্তু বামেদের ঝুলি শূন্য! ওই চার জেলার উদাহরণ সামনে রেখেই ফব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বুধবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘কেন শরিকদের উপেক্ষা করে কংগ্রেসকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হল, আমাদের জেলার নেতারা জানতে চাইছেন। কংগ্রেসের ভোট বামেরা যত না পেয়েছে, তার চেয়ে বেশি বাম ভোট পেয়ে কংগ্রেস লাভবান হয়েছে। আগামী লোকসভা ভোটের আগে সিপিএমকেই বলতে হবে, বামফ্রন্টের আর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না!’’
দলের মধ্যে বিস্তর বিতর্কের শেষে সিপিএমের হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসে পথ খুলেছে বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার। লোকসভা ভোটে তাই সিপিএম কংগ্রেসের জন্য দরজা বন্ধ করে দেবে, এমন ধরে নেওয়ার কারণ নেই। বারাসত, পুরুলিয়া ও কোচবিহার— এই তিনটি লোকসভা আসন ফব লড়ে। সেখান থেকে কোনও আসন কংগ্রেসের হাতে চলে যাক, এই সম্ভাবনা আটকাতেই ফব-র আগাম হুঁশিয়ারি বলে বামেদের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা। নরেনবাবুও বলেছেন, সিপিএমের সঙ্গে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চান।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘জেলা থেকে এখনও পঞ্চায়েত পর্যালোচনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসেনি। পুরুলিয়ার বৈঠকে আমি নিজেই যাব। আমাদের জেলা নেতৃত্বের রিপোর্ট না পেয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’