রাজ্যের দেওয়া টাকার কড়ায় গণ্ডায় হিসেব রাখুন।
মঙ্গলবার কালিম্পংয়ের গ্রাহামস গ্রাউন্ডের মঞ্চ থেকে জিটিএ এবং উন্নয়ন বোর্ডগুলিকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই জানিয়ে দিলেন, এখনই জিটিএ নির্বাচনের কথা ভাবা হচ্ছে না।
গত বছর গোড়ার দিকে বিমল গুরুংয়ের জিটিএ-র কাছে হিসেব চেয়ে বিশেষ অডিট দল পাঠিয়েছিল রাজ্য। গুরুংয়ের সঙ্গে দূরত্ব তখন থেকে বাড়তে শুরু করে। এ বার বিনয় তামাংয়ের তত্ত্বাবধায়ক বোর্ডের প্রতি রাজ্য সরকারের বিশেষ আনুকূল্য রয়েছে বলে যাতে কেউ আঙুল
তুলতে না পারে, এ দিন সেই রাস্তাই বন্ধ করার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, অদূর ভবিষ্যতে জিটিএ ভোট হওয়ার সম্ভাবনা
খুবই ক্ষীণ।
গত বছর সেপ্টেম্বরে জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক বোর্ড দায়িত্ব নেয়। তার ছ’মাস পরে বোর্ডের আরও এক বার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এ বছর সেপ্টেম্বরে বোর্ডের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। ভোট না হলে তখন আরও এক দফা ছ’মাসের মেয়াদ বাড়বে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, ‘‘জিটিএ যাঁদের দায়িত্বে ছিল, তাঁরা তো পদত্যাগ করে চলে গেলেন। ফলে পাহাড়ের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে আমরা নতুন করে জিটিএ গঠন করি। এখন তো ভোট হওয়ার পরিস্থিতি নয়। তাই তত্ত্বাবধায়ক বোর্ডই কাজ করছে।’’ মমতার কথায়, ‘‘বোর্ডগুলো এবং জিটিএ ঠিকঠাক করে কাজ করুক। অডিটও করতে হবে। এ জনতার টাকা। তার হিসেব রাখা জরুরি।’’
আরও পড়ুন: ঝাড়গ্রামে বিজেপি অফিসে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে, আমরাই আক্রান্ত, পাল্টা তৃণমূল
মুখ্যমন্ত্রীর এই কথা শোনার পরে পাহাড়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, সম্ভবত এখনই পাহাড়ে বিনয়কে ভোট ময়দানে নামতে দিতে চান না মমতা। কেন? পাহাড়ের এক শ্রেণির মানুষের মতে, ‘‘বিমল গুরুংয়ের ছায়া এখনও পুরোপুরি সরেছে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।’’ শুভা প্রধান, কুমার চামলিং, বিজয় সুনদাসের মতো গুরুংপন্থীরা জিটিএ থেকে পদত্যাগ করে আপাতত চুপ। এ কথা জানিয়ে ডিজিএইচসি-র পর্যটন বিভাগের প্রাক্তন কর্মী বিমল খাসবের বলেন, ‘‘পুলিশ মামলা দিতে পারে— এই ভয়ে তাঁরা হয়তো বসে আছেন। কিন্তু ভোট ঘোষণা হওয়ার পরে গুরুং যদি ডাক দেন, তা হলে তাঁরাই আবার জনমত সংগঠিত করতে মাঠে নেমে পড়তে পারেন।’’
বিনয়ও বিষয়টি বিলক্ষণ জানেন। এ দিন মঞ্চে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর একান্তে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়। তার পরেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জিটিএ ভোটের বিষয়টির উল্লেখ করেন মমতা।
জিটিএ-র মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও ভোট না-হওয়ার প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওখানে কিছু হাতের লোক তৈরি করে ভোট করতে চাইছেন। কিন্তু যে ভাবে সেখানকার মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে, সব কিছুর বদলা নেবেন পাহাড়বাসী।’’