লেনদেনের ঘুঘু যে অন্দরেই! ধর্না আয়করে

এ বার ওই দফতরেরই কমিশনার-পদের এক শ্রেণির অফিসারের বিরুদ্ধে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র মতো গুরুতর অভিযোগ তুলল অফিসারদের ইউনিয়ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০২:২২
Share:

প্রতিবাদ: আয়কর ভবনে আধিকারিকদের বিক্ষোভ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

গোলমালের মূলে ছিল আয়কর অফিসারদের বদলি এবং পোস্টিং। তা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেই হঠাৎ ফোঁস করে উঠল গোখরো!

Advertisement

আয়কর অফিসারদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে হামেশাই। এ বার ওই দফতরেরই কমিশনার-পদের এক শ্রেণির অফিসারের বিরুদ্ধে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র মতো গুরুতর অভিযোগ তুলল অফিসারদের ইউনিয়ন। সেই ইউনিয়নের আশঙ্কা, কমিশনারদের হাতে বদলি ও পোস্টিং করার ক্ষমতা দিলে তাঁদের একাংশ মোটা টাকার বিনিময়ে ‘লোভনীয়’ জায়গায় পোস্টিং করিয়ে দেবেন। যাঁরা টাকা দিতে পারবেন না, তাঁদের বদলি করা হবে যেখানে-সেখানে।

কলকাতায় আয়কর দফতরের প্রিন্সিপাল চিফ কমিশনার (পিসিসি) সীমা খুরানা পাত্রকে লেখা চিঠিতে এই মর্মে অভিযোগ করেছে অফিসার অ্যাসোসিয়েশন। অফিসারদের আশঙ্কা, কমিশনারদের ওই ক্ষমতা দিলে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অফিসারদের দিয়ে বেআইনি কাজ করাবেন কেউ কেউ। না-শুনলেই বদলি! তবে দফতরের অফিসারদের একাংশও যে মোটা টাকা দিয়ে লোভনীয় পোস্টিং চান, ইউনিয়ন নেতারা চিঠিতে তা স্বীকার করেছেন।

Advertisement

কমিশনারদের হাতে ওই ক্ষমতা দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার ধর্মতলায় আয়কর ভবনের দোতলায় পিসিসি-র ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান অফিসারেরা। ধর্নায় বসেন। ইউনিয়নের সর্বভারতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান দেখে কর্তৃপক্ষ সকালেই পুলিশে খবর দেন। আমরা জানাই, পুলিশ দোতলায় উঠলে আমরা আয়কর ভবন খালি করে বেরিয়ে যাব। তার পর থেকে পুলিশ একতলাতেই বসে রয়েছে।’’

কলকাতায় এই অফিস থেকে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামানের আয়কর সংক্রান্ত কাজকর্ম দেখভাল করা হয়। দেশে এই ধরনের ১৮টি আঞ্চলিক অফিস আছে। প্রতিটি আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্বে এক জন পিসিসি। কলকাতায় সীমাদেবীর অধীনে রয়েছেন ২৯ জন আঞ্চলিক কমিশনার। এক-এক জন কমিশনারের অধীনে গড়ে ১২ জন অফিসার। ভাস্করবাবুর অভিযোগ, অফিসারদের বদলি ও পোস্টিং কোথায় হবে, ২০ বছর ধরে তা ঠিক করছিলেন পিসিসি। এ ক্ষেত্রে কমিশনারদের কোনও ক্ষমতা থাকত না। এ বারেই বলা হয়েছে, প্রত্যেক কমিশনারকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অফিসার দেওয়া হবে। তাঁর অঞ্চলে কোন অফিসার কী কাজ করবেন, তা ঠিক করবেন তিনিই। তাতে ‘অসৎ’ কমিশনারেরা আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠলে অফিসারদের বিপদ বাড়বে বলে ইউনিয়নের আশঙ্কা।

সীমাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা দফতরের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে আমি কোনও কথা বলতে চাই না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement