ভারতমালা প্রকল্পে আর্থিক করিডরের যে ৫৫ কিলোমিটার রাস্তা মুর্শিদাবাদে পড়ছে, তার জন্য আগামী অগস্ট থেকেই জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। শনিবার বহরমপুর সার্কিট হাউসে বৈঠকের পরে জেলাশাসক পি উলাগানাথন এ কথা জানিয়েছেন।
ভারতমালা প্রকল্পে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছ বরাবর মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনাকে যুক্ত করার জন্য চার লেনের যে রাস্তা গড়া হচ্ছে, তার জমি অধিগ্রহণের জন্য শুক্রবারই জেলার চারটি ব্লকে প্রথম দফায় বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। করিডর গড়ার কাজ হচ্ছে পরের ধাপে।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প আধিকারিক (কলকাতা) সুব্রত নাগ বলেন, “ভারতমালা প্রকল্পে খড়্গপুর থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত আর্থিক করিডর গড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মেচোগ্রাম থেকে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি ব্লকের মোরগ্রাম পর্যন্ত ২৩৫ কিলোমিটার চার লেনের রাস্তা হবে।” এই রাস্তাটি তৈরি হয়ে গেলে খড়্গপুর, হলদিয়া শিল্পাঞ্চল, হলদিয়া বন্দর থেকে পণ্যবাহী গাড়ি সহজেই শিলিগুড়ি, নেপাল, ভুটান যেতে পারবে।
এই করিডর মুর্শিদাবাদের যে সব জায়গা দিয়ে যাবে, সেই সব এলাকার বিডিও, মহকুমাশাসক ও পঞ্চায়েত প্রধানদেরই এ দিন বৈঠকে ডাকা হয়। জেলাশাসক ও প্রকল্প আধিকারিক সেখানে হাজির ছিলেন। জেলাশাসক জানান, যে চারটি ব্লকের উপর দিয়ে এই রাস্তা যাবে, ওই সব এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে এক মাত্র শেরপুরে প্রস্তাবিত রাস্তাটিকে এড়িয়ে বাইপাস করার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান আবেদন করেছেন। তাঁরা ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম হয়ে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত ২৩৫ কিলোমিটার রাস্তা হবে। তার ১১৫ কিলোমিটার হবে বাইপাস। ছ’লেনের রাস্তা করার পরিকল্পনা থাকলেও গোড়ায় তা চার লেনেরই হচ্ছে। তা দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে যান চলাচল করতে পারবে।
সেই রাস্তার দু’পাশে সাধারণ গাড়ি চলাচলের আরও দু’টি লেন (সার্ভিস রোড) থাকবে। তাতে ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলবে। এর জন্য শহরাঞ্চলে ৭০ মিটার এবং গ্রামাঞ্চলে ৬০ মিটার চওড়া জমি লাগবে। ছ’টি জেলায় প্রায় ১২০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। মুর্শিদাবাদে প্রায় ২৬৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তাতে বাধা আসবে না তো?
জেলাশাসক বলেন, “নতুন আইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ফলে জমিদাতারা আগের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিপূরণ পাবেন। তাই জমি অধিগ্রহণ নিয়ে আদৌ সমস্যা হবে না।” এ ছাড়া, সাধারণ মানুষের অসুবিধা যাতে যতটা সম্ভব কম হয়, তা মাথা রেখেই জমি অধিগ্রহণ করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।