প্রায় ক্ষণে ক্ষণে মর্জি বদলাচ্ছে হাওয়ামোরগ। বর্ষা নিয়ে জোরালো হতে থাকা প্রশ্ন ও সংশয় নতুন এক ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর।
গ্রীষ্ম এ বার রুদ্ররূপ না-দেখানোয় বর্ষা ও বর্ষণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন এক দল আবহবিদ। পশ্চিম ভারতে যথেষ্ট তাপবলয় তৈরি না-হওয়ায় মৌসুমি বায়ু ঠিক কবে সক্রিয় হবে, যথেষ্ট জোরদার বর্ষণ হবে কি না— এই সব কিছু নিয়েই সংশয় প্রকাশ করছিলেন তাঁরা। মৌসুমি বায়ুর পথ মসৃণ না-ও হতে পারে বলে ওই আবহবিদদের ধারণা।
এরই মধ্যে আরব সাগরে হাজির হয়েছে নতুন অতিথি ‘সাগর’। তার প্রভাবেই চাঙ্গা হয়েছে মৌসুমি বায়ু। তাই এ বার সময়ের আগেই কেরল দিয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে প়ড়তে পারে বর্ষা। নির্ঘণ্ট মেনে চললে কেরলে মৌসুমি বায়ুর ঢোকার কথা ১ জুন। নয়াদিল্লির মৌসম ভবন শুক্রবার জানিয়েছে, ২৯ মে কেরল দিয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকতে পারে সে। গত বছর কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল ৩০ মে।
সম্প্রতি আরব সাগরে দানা বেঁধেছিল একটি গভীর নিম্নচাপ। শক্তি বাড়িয়ে সেটিই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ভারতীয় আবহবিজ্ঞানীরা তার নাম দিয়েছেন ‘সাগর’। আবহবিদেরা জানান, বর্ষা সমাগমের আগে এমন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে মৌসুমি বায়ু দ্রুত সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, গোয়া, মহারাষ্ট্র এবং লক্ষদ্বীপের উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। মৎস্যজীবীদের এডেন উপসাগর এলাকায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি সোমালিয়ার দিকে বয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকবে কবে? নিয়ম মেনে চললে গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষার আসে ৮ জুন। কিন্তু কেরলে মৌসুমি বায়ু সময়ের আগে ঢুকলেই যে বাংলায় তার হাজিরা জলদি হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা আবহবিদেরা দিচ্ছেন না। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত বছর গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষার আসতে অন্তত চার দিন দেরি হয়েছিল। কেরলে বর্ষা হাজির হওয়ার আগে তার বঙ্গোপসাগরীয় শাখা ঢোকে আন্দামানে। ওই দ্বীপপুঞ্জে বর্ষা ঢুকতে এ বার দেরি হতে পারে। ২০ মে-র বদলে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সেখানে বর্ষা ঢুকতে পারে বলে মনে করছেন মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা।