ফাইল চিত্র।
রামনবমীর ময়না-তদন্ত শুরু হয়েছে নবান্নে। ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের দিন ও তার পরে রাজ্যের পাঁচ-ছয় জায়গায় অশান্তি ছড়িয়েছিল। এই সব ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। পুলিশ সময়মতো সক্রিয় হলে অনেক ঘটনাই ঠেকানো যেত বা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত।
পুলিশ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রামনবমীর সময় অনেকে ভিন্ রাজ্য থেকে এসে এখানে হিংসা ছড়িয়েছে। সেই ‘তত্ত্বের’ সপক্ষে প্রমাণ হিসেবে বলা হয়েছে, রানিগঞ্জের মিছিল থেকে যে ‘ডিজে-সেট’ উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ থেকে আসা। কিন্তু, স্থানীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, রানিগঞ্জে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে ধানবাদ থেকে ‘ডিজে’ আনাই দস্তুর। ‘ডিজে-র’ সঙ্গে বহিরাগতেরাও এসে গোলমাল পাকিয়েছিল, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ সবিস্তার তদন্তে মেলেনি।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যের পাঁচ জায়গা থেকে মোট ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই স্থানীয়। আসানসোলে তিন জন মারা গিয়েছেন বলে নবান্নে পাঠানো পুলিশ রিপোর্টে জানানো হয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে পুলিশ জানাচ্ছে মৃতের সংখ্যা দুই। তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দা। তৃতীয় দেহটি দুর্গাপুরে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: কেশরীর রিপোর্টে কাঠগড়ায় পুলিশই
স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক গোলমালে গোটা রাজ্যে ছ’জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ১২৫ জন আহত হয়েছেন, ৬৭টি দোকান ও বাড়ি পুড়েছে। কাঁকিনাড়ায় ৬টি, পুরুলিয়ায় ২টি এবং আসানসোলে ১টি পুলিশের গাড়ি জ্বলেছে। কাঁকিনাড়ায় একটি পুলিশ কিয়স্কও পুড়েছে, রানিগঞ্জে বোমায় জখম হয়েছেন এক পুলিশ অফিসার। পুলিশের আহত হওয়ার ঘটনা ওই একটিই।
স্বরাষ্ট্র কর্তাদের একাংশের প্রশ্ন, ১০টি গাড়ি-কিয়স্ক পুড়লেও পুলিশ কর্মীদের আঘাত নেই কেন? তবে কি সংঘর্ষ বড় আকার নেওয়ায় তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন? বহু সংঘর্ষ সামলানো এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, ‘‘পুলিশ পিঠটান না দিলে আহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আর পুলিশ ‘অ্যাকশন’ করলে গোলমাল ছড়াত কম।’’ আসানসোলের এক পুলিশ কর্তা জানান, যখন ‘কাজে’ নামার কথা, তখন রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায় সংযম দেখাতে হয়েছিল। তাতেই যা হওয়ার হয়েছে।