কলকাতার সঙ্গে সঙ্গে জেলাতেও পথ নিরাপত্তা বাড়াতে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ বা ‘সামলে চালাও জান বাঁচাও’ কর্মসূচির প্রচার শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু যানবাহন সামলাতে জেলা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের পরিকাঠামো তেমন ছিল না। এই সমস্যার মোকাবিলায় এ বার জেলাগুলিতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চাইছে নবান্ন। বিভিন্ন মোড়ে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা-সহ নানা উন্নত যন্ত্র বসানো হচ্ছে। ট্র্যাফিক পুলিশের কাজে নজরদারির জন্য ডিএসপি-পদ তৈরি করে নিয়োগও হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আগে এক জন ডিএসপি অন্য বিভাগের পাশাপাশি ট্র্যাফিক দেখতেন। তাতে নজরদারির ফাঁক থাকত। সেটা পূরণ করার জন্য সদ্য প্রশিক্ষণ সাঙ্গ করা অফিসারদেরই মূলত এই পদে নিয়োগ করা হয়েছে।’’
নবান্নের খবর, রাজ্য স্তরে ট্র্যাফিক পুলিশের জন্য আইজি, এডিজি পদমর্যাদার অফিসারেরা থাকলেও জেলার ডিএসপি (ট্র্যাফিক) সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের অধীনেই থাকবেন। কী ভাবে জেলা স্তরে ট্র্যাফিক বিভাগ সামলাতে হবে, সেই বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই ডিএসপি-দের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এডিজি (ট্র্যাফিক) বিবেক সহায়।
পুলিশের তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে ১৫টি রাজ্য সড়কের দৈর্ঘ্য চার হাজার কিলোমিটার। জাতীয় সড়ক রয়েছে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো ও সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের দুর্ঘটনার পরেই নবান্ন রাজ্য ও জাতীয় সড়কে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ শুরু করে। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক গার্ডের আদলে জেলায় ট্র্যাফিক পুলিশ ফাঁড়ি’ তৈরির প্রস্তাব আসে।
রাজ্য পুলিশের একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি চালু হওয়ার পরে দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের থেকে কমেছে। আবার মুর্শিদাবাদে বিলে বাস প়ড়ে যাওয়ার মতো সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার উদাহরণও রয়েছে। পুলিশকর্তাদের একাংশ বলছেন, কর্মসূচি চালু হলেও যান সামলানোর প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো মেলেনি। ফলে রাস্তায় নেমে কাজ করার ক্ষেত্রে খামতি থেকে যাচ্ছিল।
পুলিশের দাবি, বেপরোয়া গা়ড়ি চিহ্নিত করতে সিসি ক্যামেরা ‘অটোম্যাটিক নম্বর প্লেট রেকর্ডিং ক্যামেরা’ (এএনপিআর) ও ‘লেজার স্পিডগান’ প্রয়োজন। বিভিন্ন মোড়ের গুরুত্ব অনুযায়ী সেগুলি বসানো হচ্ছে। জাতীয় সড়কে ‘ব্ল্যাক স্পট’ বা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে নিরাপত্তা বা়ড়ানো হয়েছে।