প্রেসিডেন্সি একশোতেই নেই, এগোল কলকাতা

মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘র‌্যাঙ্কিং’ (এনআইআরএফ)-এ সেই প্রেসিডেন্সি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে প্রথম একশোয় নেই! মান-সূচকে খানিকটা নেমে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও। উঠেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৩
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকর্ষ কেন্দ্র করতে চান। কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ‘র‌্যাঙ্কিং’ (এনআইআরএফ)-এ সেই প্রেসিডেন্সি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে প্রথম একশোয় নেই! মান-সূচকে খানিকটা নেমে গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও। উঠেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের কলেজগুলির মধ্যে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির পৌঁছে গিয়েছে প্রথম দশে।

Advertisement

‘এনআইআরএফ ২০১৮’ প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার। দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্সি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘সার্বিক’ তালিকায় রয়েছে থেকে ১৫১ থেকে ২০০-র মধ্যে। আর ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ তালিকায় ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে ঠাঁই হয়েছে তাদের। গত বার সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান— এই তিন বিভাগে যাদবপুর ছিল যথাক্রমে দ্বাদশ, পঞ্চম এবং নবম স্থানে। এ বার তা হয়েছে যথাক্রমে ত্রয়োদশ, ষষ্ঠ এবং দ্বাদশ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগে গত বার ছিল যথাক্রমে সাতাশ এবং ষোলোয়। এ বার কিছুটা এগিয়ে যথাক্রমে একুশে এবং চোদ্দোয় আছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়-তালিকায় ৮৬-তে রয়েছে কল্যাণী, ৯৬-এ বর্ধমান।

২০১৬ সালের এই যোগ্যতামান নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রেসিডেন্সি ছিল ৪১তম স্থানে। কিন্তু গত বছর এই তালিকায় নামই ওঠেনি তাদের! বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ তখন জানিয়েছিলেন, এই বিষয়ে তথ্য পাঠানোর জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে যে-কোড দেওয়া হয়েছিল, সেটিই ভুল ছিল। এই বিষয়ে কেন্দ্রে চিঠিও লেখেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। এ বার প্রেসিডেন্সি একশোর বাইরে চলে যাওয়ার খবর শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নতুন। তা ছাড়া এমন সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে, যেখানে মূলত প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে পঠনপাঠন হয়। আশা করব, পরবর্তী পর্যায়ে বিষয় অনুযায়ী প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা হবে।’’ তালিকায় প্রেসিডেন্সি নীচের দিকে ঠাঁই পেলেও তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের মান নিয়ে রিপোর্টে উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য করা হয়েছে।’’

Advertisement

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এ দিন দিল্লিতে এই র‌্যাঙ্কিং ঘোষণার অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি জানান, যাদবপুরের মান যে কিছুটা নেমেছে, (ওই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে) ‘পাবলিক পারসেপশন’ বা ‘সাধারণের মধ্যে ধারণা’ বিভাগে কম নম্বর ওঠাটাই তার কারণ। শীর্ষ তালিকায় থাকা আইআইএস বেঙ্গালুরু এই বিভাগে ১০১৩ পেলেও যাদবপুরের প্রাপ্তি মাত্র ১৩৬! সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধীদের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রেও আমাদের প্রাপ্ত নম্বর কিছুটা কম।’’

মান-তালিকায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা উঠে আসায় উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘উৎকর্ষের বিচারে আমরা কয়েক ধাপ উঠে এসেছি। এটা খুবই আনন্দের। শিক্ষকদের গবেষণা আমাদের সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতে আরও এগোনোর চেষ্টা করব।’’

কলেজগুলির মধ্যে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের স্থান হয়েছে নবম। গত বছর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ষষ্ঠ স্থানে থাকলেও এ বার পেয়েছে সপ্তদশ স্থান।

খড়্গপুর আইআইটি গত বার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্বিক তালিকা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল যথাক্রমে চতুর্থ এবং তৃতীয় স্থানে। দুই ক্ষেত্রেই এ বার তারা এক ধাপ নেমেছে। বিশ্বভারতী নেমেছে বেশ কয়েক ধাপ। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়— এই দুই বিভাগে গত বছর বিশ্বভারতী ছিল ৩১ এবং ১৯তম স্থানে। এ বার যথাক্রমে ৪৮ এবং ৩১তম স্থানে নেমে গিয়েছে তারা। শিবপুর আইআইইএসটি গত বছর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভাগে ৭৩তম স্থান পেয়েছিল। এ বার উঠে এসেছে ৪৪তম স্থানে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে গত বছর ১৭-য় থাকা সত্ত্বেও এ বার পিছিয়ে গিয়েছে ৩০তম স্থানে।

আইআইএম কলকাতা ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে গত বছর ছিল তিনে। এ বারেও তা-ই। সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গত বার ৩৯তম স্থানে ছিল তারা। এ বার উঠে এসেছে ৩৪-এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন