প্রতীকী ছবি।
সরকারি কাজে দেরি হয়। সকলেই জানে। তা বলে কি কোনও কোনও খাতে টাকা মঞ্জুর করতে বছর ঘুরে যায়? প্রশ্নটা উঠছে সরকারি স্কুলের গ্রন্থাগারে বই কেনার টাকা বরাদ্দ নিয়ে ‘অস্বাভাবিক’ দেরি দেখে।
রাজ্যের ৩৯টি সরকারি স্কুলের গ্রন্থাগারে বই কেনার জন্য সরকার প্রতিটি স্কুলকে এক লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে। ২০১৭-’১৮ আর্থিক বর্ষের এই অনুমোদনের নির্দেশ স্কুলগুলিতে পৌঁছেছে আর্থিক বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ। স্বভাবতই সে-দিনের মধ্যে দু’তিনটি স্কুল ছাড়া এক লক্ষ টাকার বই কেউই কিনে উঠতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, পাঠ্যক্রম শেষ করা থেকে পরীক্ষা নেওয়া, ফল ঘোষণা— সবেতেই দেরি দেখতে অভ্যস্ত বাংলা। তবে স্কুল গ্রন্থাগারে বচ্ছরকার বই কেনার জন্য বরাদ্দের অনুমোদনে এত দেরি ‘অস্বাভাবিক’।
প্রতিটি অর্থবর্ষের বরাদ্দ টাকায় সেই বছরেই বই কিনে ফেলাটাই দস্তুর। নিয়ম অনুযায়ী টাকার অনুমোদন এলে দরপত্র আহ্বান করে বই কিনতে হয়। তার পরে বই কেনার বিল কলকাতার সরকারি স্কুলগুলির ক্ষেত্রে পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসে এবং জেলার সরকারি স্কুলগুলির ক্ষেত্রে ট্রেজারি অফিসে জমা দিতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াই সময়সাপেক্ষ। এ বার নির্দেশ মিলেছে শনিবার। তার পরে দু’তিনটি স্কুল ছাড়া অন্যেরা ওই অল্প সময়ে এত কিছু করতে পারেনি।
উত্তরবঙ্গের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, জেলায় বসে সব নিয়ম মেনে এক দিনে এক লক্ষ টাকার বই কেনা কোনও পরিস্থিতিতেই সম্ভব নয়। যে-ক’টি স্কুল বই কিনতে পেরেছে, তারাও ঠিকঠাক নিয়ম মেনে সেটা করতে পেরেছে কি না, সন্দেহ আছে।
সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, এমনটা আগে কখনও ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাব। স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের গাফিলতিতেই এটা হল কি না, সেটাও জানা দরকার।’’
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কেউই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, এই টাকা আগেই বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু খরচের নির্দেশ স্কুলে পাঠানো হয়েছে শেষ মুহূর্তে। এই সব ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেই টাকা খরচের সময়সীমা বাড়াতে হয়। তার আলাদা নির্দেশও স্কুলগুলিতে যাওয়ার কথা। তা যায়নি।