কাকভেজা: হঠাৎ বৃষ্টি। রবিবার ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ
এপ্রিলে সাধারণ ভাবে তার আসার কথা তিন-চার বার। রবিবার মাসপয়লাতেই হাজির হয়ে চমকে দিল কালবৈশাখী। মরসুমে এই প্রথম!
রাতে পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা বজ্রগর্ভ মেঘ জোর বৃষ্টি নামায় কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায়। সঙ্গে ঝ়ড়। অনেকটাই নেমে যায় রাতের তাপমাত্রা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার।
ঝ়ড়ের দাপটে ইকো পার্কের শিশু উদ্যানে জাম্পিং বেলুন উল্টে আটটি শিশু এবং এক কর্মী আহত হন। প্রথমে কাছের হাসপাতালে পাঠানো হয় সকলকেই। জখম গুরুতর হওয়ায় পরে চারটি শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের অন্য হাসপাতালে। একটি শিশু ভেন্টিলেশনে আছে। কর্মীর হাত ভেঙেছে। ঝড়ের দাপটে ন’টি বিমান কলকাতায় নামতে না-পেরে অন্যত্র চলে যায়। মহানগরে বিমান পরিষেবা কিছু ক্ষণ বন্ধ ছিল। পূর্ব রেলে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচলও।
আবহবিদেরা জানান, গাঙ্গেয় বঙ্গ ও ঝা়ড়খণ্ডের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। বাতাসে রয়েছে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্পও। রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা জানান, বিকেলে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি হয়ে সেই মেঘ বয়ে এসেছে কলকাতা এবং লাগোয়া দুই ২৪ পরগনায়।
ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধার পরে দু’দিন ধরেই বিভিন্ন জেলায় বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু দু’-এক বার কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া খাস কলকাতা সেই ঝড়বৃষ্টি সে-ভাবে পায়নি। আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হলেও তা তেমন শক্তিশালী হচ্ছিল না। ফলে দু’-একটি জেলায় ঝড়বৃষ্টির পরেই নিস্তেজ হয়ে প়়ড়ছিল সে। কখনও বায়ুপ্রবাহের ভোলবদলের ফলে মেঘ চলে যাচ্ছিল অন্য দিকে। হাওয়া অফিসের খবর, এ দিনের মেঘ গোড়া থেকেই শক্তিশালী ছিল। বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে এগোলেও তার শক্তি ফুরিয়ে যায়নি। বায়ুপ্রবাহও তাকে দিগ্ভ্রষ্ট করতে পারেনি।