প্রতীকী ছবি।
স্নাতক স্তরের পরে এ বার স্নাতকোত্তরেও চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ চালু করতে চান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বর্তমানে ওই স্তরে শিক্ষকের যা সঙ্কট, তাতে এই প্রয়াস কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান শাসক ও বিরোধী উভয় দলের শিক্ষক সংগঠন। বরং এর ফলে পঠনপাঠন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে একযোগে সরব হয়েছে তারা।
সম্প্রতি বিজ্ঞান বিভাগের ডিন মধুসূদন দাসের সঙ্গে এক আলোচনায় শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন কুটা। সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছে শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-ও। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের দাবি, শূন্য পদ তেমন নেই। যেটুকু রয়েছে, সেখানে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
আগেই কুটা-র তরফে ডিনকে জানানো হয়েছিল, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে প্রায় ৩০০ অনুমোদিত শিক্ষক-পদের মধ্যে ১০০-র বেশি লোক নেই। বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে ১৪০টির মধ্যে ৬০টিরও বেশি পদ খালি। বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে কোথাও ৩০, কোথাও ৪০ শতাংশ পদ ফাঁকা। কুটা-র অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী পড়ুয়া ও শিক্ষকের যে অনুপাত রয়েছে, তা-ও যথেষ্ট নয়। কুটা সোমবার এই বিষয়ে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মারকলিপিও দেয়। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পার্থিব বসু জানান, বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য দ্রুত বসবেন বলে তাঁদের জানিয়েছেন। পার্থিববাবু আরও জানান, বিজ্ঞান বিভাগে থিওরির সঙ্গে প্র্যাক্টিক্যাল থাকায় শিক্ষকের চাহিদা বেশি। পড়ুয়ারা অভিযোগ করছেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক না-থাকায় তাঁরা মুশকিলে পড়ছেন। কুটা-র অভিযোগ, অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ না-হলে পঠনপাঠনের মান অনেকটাই নেমে যাবে। প্রভাব পড়বে ‘র্যাঙ্কিং’-এ।
আগেই সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ৬২ বছরের বেশি কোনও শিক্ষককে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না। কুটা এবং ওয়েবকুপা-র বক্তব্য, রাজ্য সরকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক আইন করে পুনর্নিয়োগ বন্ধ করেছে। আইন মেনে ৬২ বছরের বেশি কাউকে অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করতে বাধা নেই। এ ছাড়া পদোন্নতি সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন শিক্ষকেরা।
ওয়েবকুপা-র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজয় ঘোষ বলেন, ‘‘পঠনপাঠনের স্বার্থে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন। অতিথি শিক্ষক নিয়োগে সমস্যা থাকায় বহু ক্ষেত্রে পঠনপাঠন বন্ধের মুখে।’’ উপাচার্য সোনালিদেবী অবশ্য বলেছেন, ‘‘রেকর্ড না-দেখে শূন্য পদের নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা যাবে না। তবে সেটা বেশি কিছু নয়। যেটুকু রয়েছে, সেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।’’ পঠনপাঠনে কোনও ব্যাঘাত ঘটছে না বলে মনে করেন তিনি।