টেস্টেই ডাহা ফেল, শব্দদানব দাপাল রাজ্য জুড়ে, আজ ফাইনালে কী হবে?

বায়ুদূষণ রুখতে আতসবাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে দু’ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময়সীমা মেনে এ রাজ্যেও বাজি পোড়ানোর সময় ধার্য করা হয়েছিল রাত ৮টা থেকে ১০টা। কিন্তু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বসানো দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যন্ত্র বলছে, রাত ৮টায় সেখানে বায়ুদূষণ সূচক ৮৮।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১৬
Share:

খাস কলকাতাতেই সন্ধ্যায় একের পর এক অভিযোগ গিয়েছে লালবাজার কন্ট্রোল রুম ও পরিবেশকর্মীদের সংগঠন সবুজ মঞ্চের কাছে।

আশঙ্কা সত্যি হল! বাজি ঠেকানোর ‘টেস্ট’-এ পাশ করতে পারল না পুলিশ-প্রশাসন। খাস কলকাতাতেই সন্ধ্যায় একের পর এক অভিযোগ গিয়েছে লালবাজার কন্ট্রোল রুম ও পরিবেশকর্মীদের সংগঠন সবুজ মঞ্চের কাছে। রাত ১১টা পর্যন্ত লালবাজারে প্রায় ৬৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৬৯ জন। বিপুল শব্দবাজি আটক করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। সবুজ মঞ্চের কাছে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহানগর এলাকা থেকে ১৮টি অভিযোগ মিলেছে। হাওয়া বিষিয়েছে জেলাগুলিতেও।

Advertisement

বায়ুদূষণ রুখতে আতসবাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে দু’ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময়সীমা মেনে এ রাজ্যেও বাজি পোড়ানোর সময় ধার্য করা হয়েছিল রাত ৮টা থেকে ১০টা। কিন্তু ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বসানো দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যন্ত্র বলছে, রাত ৮টায় সেখানে বায়ুদূষণ সূচক ৮৮। একটু দূরে ক্যামাক স্ট্রিটে মার্কিন কনস্যুলেটের যন্ত্রে সূচক দাঁড়িয়েছে ১৮৭। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘প্রচুর শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে। কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকে আসা অভিযোগ তারই প্রমাণ। বায়ুদূষণের তথ্যও আতসবাজি নিয়ে নির্দেশ না-মানার প্রমাণ।’’

তেঘড়িয়া, বাগুইআটি, কৈখালিতে রাত ১০টার পরেও প্রচুর বাজি ফেটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। দমদম স্টেশন ও সেভেন ট্যাঙ্ক এলাকায় বিপুল শব্দবাজি ফেটেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মায়ের কথা কি অমান্য করা যায়?’, এ বার রাজভোগ-বার্তা কেষ্টর

রাত ৮টার পরে বেহালা, রবীন্দ্রনগর, পর্ণশ্রী, বিজয়গড়, বাঙুর, লেকটাউন, বাগুইআটি, সিঁথি, দমদমের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেদার শব্দবাজি ফেটেছে। সবুজ মঞ্চের আহ্বায়ক নব দত্তের দাবি, কলকাতায় সোনারপুর, গড়িয়া এবং কসবা থেকে বহু অভিযোগ মিলেছে। চলেছে ডিজে বক্সের তাণ্ডবও। কৈখালি, বাগুইআটি-সহ বহু জায়গায় বহুতল আবাসনগুলির ছাদে পুলিশ তালা দিয়েছিল। ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকার কয়েকটি আবাসন কমিটি নিজেরাই ছাদে রক্ষী মোতায়েন করেছিল। তবে বাজির দাপট কমেনি।

নাগেরবাজার, মতিলাল কলোনি, পি কে গুহ রোড, বালিগঞ্জে প্রচুর শব্দবাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বালিগঞ্জ চক্রবেড়িয়া লেনের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, তিনি স্থানীয় থানায় ফোন না ধরায় তিনি লালবাজারে অভিযোগ করেন। রাত বাড়তেই প্রচুর অভিযোগ এসেছে লালবাজারে। অনেকেই মানছেন, যে সব জায়গায় পুলিশ সতর্ক থেকেছে, সেখানে তুলনায় কম শব্দবাজি ফেটেছে এ বছর।

জেলা থেকেও প্রচুর অভিযোগ গিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে। আজ, দেওয়ালিতেও পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে ২৩৩৫-৮২১২/৩৯১৩ নম্বরে (‘২২৩৫’ নয়) ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন নাগরিকেরা।

পুলিশকর্তাদের অভিজ্ঞতা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে বাজির উপদ্রব মারাত্মক আকার নেয় দেওয়ালির রাতে। তা হলে আজ, বুধবার ফাইনালে কী হবে? আবার শব্দে জব্দ?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন