বাক্সবন্দি: ঠিকানা আরবদুনিয়া।
বাংলার আম আবার সাত সাগর পাড়ি দিতে শুরু করেছে। এ বার বিদেশ সফরের রাস্তা নিল লিচুও। এবং এই প্রথম সরকারি উদ্যোগে বাংলার লিচু গেল সাগরপারে।
চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবের দামাম আর দুবাইয়ে তিন হাজার কিলোগ্রাম লিচু পাঠানো হয়েছে। তার সবই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন বাগানের। কাতার, ওমান-সহ পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য দেশের আমদানিকারী সংস্থাগুলিও পশ্চিমবঙ্গ থেকে লিচু আমদানির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাজ্য সরকারের আশা, জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও মালদহের লাল রসালো লিচু শোভা পাবে ওই সব দেশের বহুতল বিপণিতে।
বাংলার লিচু ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ায় রফতানির জন্য এক বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীন কৃষিজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানি উন্নয়ন পর্ষদ বা অ্যাপিডা এবং রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর। অ্যাপিডা সূত্রের খবর, দুবাইয়ে ৭-৯ জুন লিচু উৎসবের আয়োজন করছে কেন্দ্র। বাংলার লিচু দিয়ে তৈরি শরবত, লিচুর আইসক্রিম, পুডিং-সহ নানা ধরনের পদ পরিবেশন করা হবে সেখানে। ব্যবসার পথ সুগম করতে আমদানি এবং রফতানিকারী সংস্থাগুলির বৈঠক হবে।
পশ্চিম এশিয়ায় বাজার ধরতে দুবাইয়ের একটি হাইপার মার্কেট সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে অ্যাপিডা সূত্রের খবর। ওই সংস্থার পশ্চিম এশিয়ায় ৫৪টি বিপণি রয়েছে। রফতানির দু’দিনের মধ্যেই দুবাই, দামাম ছাড়াও কাতার, ওমান থেকে বাংলার লিচু নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের একটি রফতানিকারী সংস্থার কর্ণধার মৃণাল সিংহ।
লিচু রফতানির উদ্যোগে সামিল হয়েছে কলকাতার একটি বণিকসভাও। কী ভাবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, বাহারিন, কাতার, ওমানের মতো দেশে বাংলার লিচুকে বিপণন করা যায়, সেই পরিকল্পনা চলছিল এ বছরের গোড়া থেকেই। অ্যাপিডার উদ্যোগে মাস তিনেক আগে ওই সব দেশের কয়েকটি আমদানিকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা পশ্চিমবঙ্গ ঘুরে যান। তখনই বাংলার লিচুর জন্য বিদেশের দরজা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়। চলতি সপ্তাহে তা বাস্তবায়িত হল।
শুধু পশ্চিম এশিয়া নয়। লিচু বিপণনের জন্য নজরে রয়েছে ইউরোপও। ভবিষ্যতে বাংলার আমের মতো লিচুও যাতে ইউরোপের বাজার ধরতে পারে, সেই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে, জানালেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী।