মহার্ঘ্যভাতার টাকা খরচ হচ্ছে জঙ্গলমহলের জন্য

জঙ্গল মহলের দরিদ্র বাসিন্দাদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করে সুবিধা দিতেই সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা (ডিএ)-র খাতে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হয়েছে বলে জানান আইএনটিটিইইসি’র রাজ্য নেতা তথা রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৮
Share:

এক সভায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

জঙ্গল মহলের দরিদ্র বাসিন্দাদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করে সুবিধা দিতেই সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা (ডিএ)-র খাতে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হয়েছে বলে জানান আইএনটিটিইইসি’র রাজ্য নেতা তথা রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রবিবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের হলঘরে আইএনটিটিইউসি অনুমোদতি ডিরেক্টরেট অব কমার্শিয়াল অ্যান্ড প্রফেশনাল ট্যাক্সেস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের রাজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন শোভনবাবু। সে কারণেই কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বকেয়া পড়ে রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে সে ব্যাপারে কর্মীদের মহানুভূতিশীল হতে বলেন। তাঁর কথায়, “সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতার টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন না সরকার ঠিক করেছে কর্মীদের ডিএ কিছু দিন আটকে রাখা যেতে পারে। কিন্তু এই মানুষরা যারা দু বেলা খেতে পেতেন না তাঁদের সমস্যা আটকে রাখা যাবে না। তাই আপনাদের ডিএ’র টাকা আটকে ওই গরিব মানুষগুলিকে বিপিএল তালিকাভুক্ত করে তাদের একটু সুবিধে করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”

Advertisement

এ দিন মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কেন ডিএ পাচ্ছেন না জানেন? কারণ মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গল মহলের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মূল স্রোতে ফিরিয়েছেন।” শোভনবাবুর কথায়, “ডিএ অবশ্যই চাই। কিন্তু মানুষ, হিসাবে বিচার করতে হবে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ দিতে পারছেন না। জঙ্গল মহলের যে মানুষগুলির শোষণ, বঞ্চনার শিকার হয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল, তারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়েছেন। যে মানুষগুলি পিঁপড়ের ডিম খেয়ে থাকতেন তাঁদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।” তিনি জানান, জঙ্গল মহলে গোলমালে গোলাগুলিতে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যেত। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম সব দলেরই কর্মী-সমর্থকদেরই মৃত্যু ঘটছিল। ২০১১ সালের পর আর কেউ মারা যাননি বলে দাবি করেন শোভনবাবু। এর পরেই তিনি বলেন, “সরকারি কর্মীদের ডিএ-র টাকা আটকে। চাল, ডাল-সহ জিনিসের দাম বেড়েছে। আপনাদের তাতে একটু কষ্ট হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু যে মানুষগুলি নিরন্ন ছিলেন তাদের একটু সুবিধা করে দেওয়া গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বুঝেছেন কর্মীদের ডিএ-র টাকা কিছু দিন আটকে রাখা যাবে। কিন্তু ওই মানুষদের সমস্যা আটকে রাখা যাবে না। ডিএ দিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা দরকার। সেটি টাকা দিয়ে গোটা জঙ্গল মহলকে বিপিএল তালিকাভুক্ত করে তাদের বাচার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” তবে সম্মেলনে আসা কর্মীদের প্রতি তিনি বলেন, “শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। অনেকে মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি রাখার জন্য নানা কথা বলেন। আমি সে পথের লোক নই। আমি বলব আপনারা দাবি আদায়ে আন্দোলন বজায় রাখুন। আমাদের আন্দোলন গঠনমূলক হবে। আমরা চেয়ার টেবল ভাঙব না। অফিসারকে মারব না। আমরা আন্দোলন ছেড়ে দিলে আরেক জন তা করবেন।”

রাজ্য থেকে হিন্দ মোটর, বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের মতো কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলেও তিনি জানান, রাজ্যে চা শিল্পের অবস্থা ভাল নয়। কেন্দ্রের তরফে পাঠের ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ায় নতুন করে ওই শিল্পে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে আমাদের লড়াই করতে হবে।” সম্মেলনে ছিলেন আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা পরিসংখ্যান মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যরা। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘এই সরকারের শ্রমনীতি, কৃষিনীতির ফলে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন