লজ-সজ্জা পাল্টে লক্ষ্মীলাভ পর্যটনে

আসবাবপত্র দেখে মনে হতো, ট্যুরিস্ট লজ নয়, পড়ুয়াদের হস্টেল। অথচ দু’টি অতিথিনিবাসই প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যের মাঝমধ্যিখানে। একটি নদীর পাড়ে। অন্যটি পরিযায়ী পাখিদের আস্তানার মধ্যে।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:২৬
Share:

আসবাবপত্র দেখে মনে হতো, ট্যুরিস্ট লজ নয়, পড়ুয়াদের হস্টেল। অথচ দু’টি অতিথিনিবাসই প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যের মাঝমধ্যিখানে। একটি নদীর পাড়ে। অন্যটি পরিযায়ী পাখিদের আস্তানার মধ্যে।

Advertisement

অবস্থান যতই আকর্ষক হোক, ছাত্রাবাসের মতো খাট-চেয়ার-টেবিল দেখেই বহু পর্যটক যে মুখ ফিরিয়ে নেবেন, এত দিন সে-কথা কারও মনে হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছেন পর্যটন-কর্তারা। সম্প্রতি রূপনারায়ণের পাড়ে গাদিয়াড়া এবং কুলিক পক্ষী নিবাসের মধ্যে থাকা রায়গঞ্জ ট্যুরিস্ট লজের সব আসবাব পাল্টে ফেলে ভোল বদলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম।

অঙ্গসজ্জার খোলনলচে বদল চলছে অন্যান্য অতিথিনিবাসেও। শান্তিনিকেতন, সল্টলেকের উদয়াচল, ডুয়ার্সের টিলাবাড়ি ট্যুরিস্ট লজের ঘরে ঢোকার মুখে, করিডরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। অনেক লজে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন অতিথিরা। শ্যাম্পুর পাতা, সাবানের সঙ্গে সঙ্গে অতিথিদের দেওয়া হচ্ছে টুথব্রাশ এবং টুথপেস্টও। এমনকী কোন লজের অবস্থান ঠিক কোথায়, অন্তত ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে তার পথনির্দেশ থাকছে।

Advertisement

আর এই ধরনের কিছু কিছু পর্যটক-বান্ধব পরিবর্তনের জেরেই নিগম চলতি আর্থিক বছরে রেকর্ড লাভের মুখ দেখতে চলেছে বলে কর্তাদের দাবি। নিগমের খবর, গত অর্থবর্ষে সংস্থা চার কোটির সামান্য কিছু বেশি টাকা লাভ করেছিল। আর এ বার শুধু জানুয়ারি পর্যন্ত লাভই হয়েছে আট ‌কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা। আর্থিক বছরের শেষে লাভের অঙ্ক ১০-সওয়া ১০ কোটিতে পৌঁছবে বলে নিগমের আশা। ‘অকুপ্যান্সি’ বা ঘরভর্তি থাকার হার গত ডিসেম্বরে ছিল ৭২.২৮ শতাংশ। সাম্প্রতিক অতীতে যা কখনও ৬০ শতাংশ পেরোয়নি।

সব পরিকল্পনা যে দিনের আলো দেখেছে, তা নয়। যেমন, কিছু দিন আগে এক সকালে শিলিগুড়ির মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে পৌঁছন ভিন্ রাজ্যের পর্যটন দফতরের এক কর্তা। রিসেপশনে যিনি ছিলেন, তিনি মুখ না-তুলেই অতিথিকে জানিয়ে দেন, বুকিং থাকলেও এখন ঘর পাওয়া যাবে না। চেক-ইন হতে দেরি আছে। ওই অতিথির ঘর বুক করা ছিল আগের রাত থেকেই। যে-সংস্থা ঘর বুক করেছিল, তারা ফোন করার পরে সম্বিৎ ফেরে ওই সরকারি কর্মীর।

নিম্ন মানের খাবার-সহ লজের পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ বিস্তর। এই ধরনের প্রচুর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গের একটি লজের ম্যানেজারকে বদলি করতে সাহস পাচ্ছেন না নিগমের কর্তারা। কেননা, ওই ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয় শাসক দলের নেতা। একই ভাবে বছরের পর বছর দায়িত্বে অবহেলা করা কোনও কর্মীকে সহবত শেখাতে দূরে বদলি করেও রাজনৈতিক চাপে তাঁকে ফেরাতে বাধ্য হন নিগমের কর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement