পরেশের দেহ মিলবে কবে, সংশয়ে পরিবার

দেহ মেলার খবর পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তা কবে নামিয়ে আনা যাবে, জানা নেই। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে মৃত দুর্গাপুরের পর্বতারোহী পরেশ নাথের পরিবারে এখন শুধুই হা-হুতাশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০২:১৫
Share:

পরেশবাবুর ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

দেহ মেলার খবর পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তা কবে নামিয়ে আনা যাবে, জানা নেই। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে মৃত দুর্গাপুরের পর্বতারোহী পরেশ নাথের পরিবারে এখন শুধুই হা-হুতাশ।

Advertisement

এভারেস্ট শৃঙ্গ জয়ে বেরিয়ে ২১ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান পরেশবাবু। ২৫ এপ্রিল তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার খবর আসে, তাঁর দেহ মিলেছে। ক্যাম্প ফোরে একটি টেন্টে রাখা রয়েছে দেহ। কিন্তু এই মরসুমে আর দেহ নামিয়ে আনা যাবে কি না, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, বর্ষা প্রায় ঢুকে গিয়েছে। আজ, রবিবার এভারেস্ট অভিযানের শেষ দিন। তার পরে দেহ নামিয়ে আনার প্রক্রিয়াও হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই স্বামীর দেহ পাওয়ার জন্য অপেক্ষার কবে অবসান হবে, জানা নেই পরেশবাবুর স্ত্রী সবিতাদেবীর।

কব্জি থেকে বাঁ হাতের বাকি অংশ নেই। এক হাত সম্বল করেই হিমাচল প্রদেশের সিটিধর, গাড়োয়াল হিমালয়ের ঠালু, কোটেশ্বর, হিমালয়ের গঙ্গোত্রী ২, চন্দ্র প্রভাত, কেদার ডোমের মতো নানা শৃঙ্গ জয় করেছেন পরেশবাবু। বরাবরের স্বপ্ন ছিল এভারেস্টে চড়ার। ২০১৫ ও ’১৫ সালে অভিযানে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য। এ বার নানা মহল থেকে সাহায্য ও দেনা করে খরচ জোগাড় করে বেরিয়ে পড়েন ৭ এপ্রিল। বেস ক্যাম্প থেকে ১৯ মে শেষ বার স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন বছর আটান্নর পরেশবাবু। আর ২১ এপ্রিল তাঁর নিখোঁজ হওয়ার খবর মেলার পর থেকে বি-জোনের শরৎচন্দ্র রোডের আবাসনে নেমে আসে অন্ধকার।

Advertisement

স্বামীকে মৃত ঘোষণার খবর শোনার পরে বুধবার কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সবিতাদেবী। তবে তাঁদের ছেলে অদ্রিশেখর এখনও জানে না, বাবা আর নেই। সবিতাদেবীর দিন কাটছে পর্বতারোহণে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পাওয়া পরেশবাবুর বিভিন্ন ট্রফি ও শংসাপত্র দেখে। সে সবের মধ্যেই যেন এখন স্বামীকে খুঁজছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ সবই সম্বল আমার।’’ ছেলে অদ্রিশিখর জানায়, বড় হয়ে সে এভারেস্টে চড়বে এবং ফেরার সময়ে বাবাকে নিয়ে আসবে।

মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা জানান, পরেশবাবুর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। প্রশাসনের তরফে কী ভাবে সহযোগিতা করা যায়, চিন্তাভাবনা চলছে। নিয়মিত বাড়িতে যাচ্ছেন পরিবারের ঘনিষ্ঠ রনজিৎ গুহ, মধুমিতা গুহরা। ইতিমধ্যে নানা সংস্থা ওই পরিবারকে কিছু সাহায্য করেছে। অদ্রিশেখরের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারেও আগ্রহ দেখিয়েছি একটি সংগঠন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন