বাসের গায়ে দুমদাম লাঠির বাড়ি পড়ছিল। বছর পাঁচেকের মেয়েকে কোলে নিয়ে নেমে পড়লেন মা। সঙ্গে স্কুলের ব্যাগ, জলের বোতল, ছাতা নিয়ে হিমসিম অবস্থা।
নেমেই দেখেন, উদভ্রান্তের মতো দৌড়চ্ছে লোকজন। লাঠি উঁচিয়ে দৌড়চ্ছে পুলিশ। দোকানদাররা দ্রুত শাটার নামানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ দোকানের ভিতরে ঢুকে পড়লেন। বারাসতে চাঁপাডালি মোড়ের কাছে দেখেন, রাস্তার এক পাশ থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। একজন বলে, বাসে আগুন দিয়েছে। সেটা অবশ্য চোখে পড়েনি মহিলার। কী ভাবে ফিরবেন বিরাটির বাড়িতে, সেটাই তখন তাঁর চিন্তা। এ দিকে, কোলে মেয়ে কেঁদে চলেছে সমানে।
অনেক বেলায় বাড়ি ফেরেন। বললেন, ‘‘টাকি রোডের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে মেয়ে। বাড়ি ফেরার পথে এই পরিস্থিতি।’’
ফেসবুকে একটি পোস্টকে ঘিরে বসিরহাট মহকুমা জুড়ে যে তাণ্ডব চলছে সোমবার থেকে, মঙ্গলবার তার আঁচ পড়ে বারাসত শহরের কাছেও। মঙ্গলবার ভোরে বসিরহাট থেকে ডাউন হাসনাবাদ লোকালে বারাসতের দিকে আসছিলেন এক অফিস যাত্রী। সকাল ৮টা নাগাদ ট্রেন আটকে পড়ে হাড়োয়ার কাছে। গোলমালের জেরে বাড়ি ফিরতে পারেননি। ট্রেনলাইন ধরে হাঁটতে থাকেন বসিরহাটের দিকে। কিন্তু ক্লান্ত শরীরে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। আশ্রয় নেন ভ্যাবলায় এক বন্ধুর বাড়িতে।
বিড়ার রাউতাড়ার একটি স্কুলে ছুটির পরে আটকে পড়েছিলেন শিক্ষকেরা। বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে ফোন করতে থাকেন সংবাদপত্র অফিসে। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পরে কোনও মতে বেরিয়ে আসেন সকলে।