কমিশন কেন বন্ধ হল, প্রশ্ন কোর্টের

বিচারপতি বাগচী সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ওই কমিশন পুনরায় চালু করে তাদের মেয়াদ বাড়ানো যায় কি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

শ্যামল সেন কমিশন বন্ধ করা হল কেন, প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট।

বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে শ্যামল সেন কমিশন গড়া হয়েছিল। নির্ধারিত কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেই কমিশন গুটিয়ে ফেলা হল কেন, তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছে, ওই কমিশনের কার্যকাল বাড়ানো হল না কেন?

Advertisement

সারদা গোষ্ঠীতে টাকা রেখে প্রতারিত আমানতকারীদের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন এই প্রশ্ন তোলে ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, ওই কমিশনের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। তার পরে কার্যকাল আর বাড়ানো হয়নি। একই সঙ্গে সরকারি কৌঁসুলি জানান, সারদার আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে রাজ্য ওই কমিশনকে ২৮৭ কোটি টাকা দিয়েছিল। তার মধ্যে ২৫১ কোটি টাকা আমানতকারীদের একাংশকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা ফেরত গিয়েছে রাজ্যের কাছে। এ ছাড়া সারদার বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করে দু’‌কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে কমিশন। সেই টাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্ট্র্যান্ড রোড শাখায় রাখা আছে।

বিচারপতি বাগচী সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ওই কমিশন পুনরায় চালু করে তাদের মেয়াদ বাড়ানো যায় কি? যদি সেটা সম্ভব না-ও হয়, রাজ্য যে-টাকা বরাদ্দ করেছিল, তা কি অন্য কোনও কমিটি বা কমিশনের মাধ্যমে লগ্নিকারীদের ফেরত দেওয়া যায়? ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, শ্যামল সেন কমিশন কোন পদ্ধতি মেনে কী ভাবে টাকা ফেরত দিয়েছে এবং কোন কোন আমানতকারী টাকা ফেরত পেয়েছেন, সাত দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে। কমিশন গুটিয়ে ফেলার পরে যে-টাকা সরকারের ঘরে ফেরত গিয়েছে, সেই অর্থের বিষয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত কী, হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে তা-ও।

Advertisement

বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার রোজ ভ্যালির আমানতকারীদের দায়ের করা মামলায় এ দিন আদালতে জানানো হয়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র কাছে ওই সংস্থার ৪০০ কোটি টাকা জমা আছে। ডিভিশন বেঞ্চ তার পরেই ইডি-কে নির্দেশ দেয়, কী ভাবে ওই টাকা আমানতকারীদের ফেরত দেওয়া যায়, তার প্রস্তাব দেওয়া হোক।

আমানতকারীদের অন্যতম আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী ও অরিন্দম দাস জানান, শ্যামল সেন কমিশনের পরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। এখন হাইকোর্টের তদারকিতে আমানতকারীদের টাকা ফেরতের বিষয়টি দেখছে সেই কমিটি। বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার কাছ থেকে আদায় হওয়া প্রায় ১৪ কোটি টাকা গচ্ছিত রয়েছে ওই কমিটির কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন